হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে অশালীন আচরণ ও যৌন হয়রানির অভিযোগে শম্ভুনাথ দেব নামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষকের বাড়িতে ইট পাটকেল ছুড়ে হামলা চালিয়েছে স্থানীয়রা। এসময় ওই শিক্ষকের বাড়ি ঘেড়াও করে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।
বুধবার (১২ নভেম্বর) দুপুর আনুমানিক দুইটা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আজমিরীগঞ্জ উপজেলার জলসুখা ইউনিয়নের দক্ষিণ আটপাড়া গ্রামের কামারহাটীতে এই ঘঠনা ঘঠে। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
স্থানীয় ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবক সুত্রে জানা যায়, উপজেলার জলসুখা ইউনিয়নের দক্ষিণ আটপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শম্ভুনাথ দেব বেশ কিছুদিন যাবত নানান অজুহাতে মেয়ে শিক্ষার্থীদের শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতেন। বিষয়টি শিক্ষার্থীরা তাদের অভিভাবকদের জানালে বুধবার সকালে কয়েকজন অভিভাবক স্কুলে গিয়ে চড়াও হন । এসময় স্থানীয়রা তাদের শান্ত থাকতে বলেন।
এরপর উত্তেজিত অভিভাবক ও স্থানীয়রা বিদ্যালয় সংলগ্ন দক্ষিণ আটপাড়ার কামারহাটিতে শম্ভুনাথ দেবের বাড়ি ঘেরাও করে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পরে ঐ শিক্ষক নিজেকে রক্ষা করতে থানায় ফোন দিলে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে। পুলিশ পৌছার সাথে সাথেই আবারো স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এসময় শিক্ষক শম্ভুনাথ দেবের বাড়িতে দফায় দফায় হামলা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে স্থানীয়রা। এরপর রাত ৯ টায় আজমিরীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.শফিকুল ইসলামের নেতৃত্ব একদল পুলিশ ঘটণাস্থলে গিয়ে শম্ভুনাথ দেবকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হাসিবুল ইসলাম বলেন, শম্ভুনাথ দেব ঐ বিদ্যালয়ের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর মেয়ে শিক্ষার্থীদের শরীরের স্পর্শকাতর বিভিন্ন স্থানে হাত দিয়ে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ এনে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা অভিযুক্ত শিক্ষকের বাড়িতে হামলা চালিয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। ওই শিক্ষককে আপাতত অন্য স্কুলে সংযুক্ত করা হবে। উক্ত ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মুছা মিয়া বলেন, শিক্ষার্থীদের সাথে অশালীন আচরণের অভিযোগে অভিভাবকরা উত্তেজিত হয়ে তাকে বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন অভিভাবক জানান, ওই শিক্ষক বিভিন্ন অযুহাতে মেয়ে শিক্ষার্থীদের বুকে হাত দেয়া, চুমু খাওয়াসহ তাদের যৌন হয়রানি করতো।
অভিযুক্ত শিক্ষক শম্ভুনাথ দেবের মুটোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
আজমিরীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমরা তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এফপি/অ