বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক হলেন করপোরেট জগতের পরিচিত ব্যক্তিত্ব ও নারী ক্রীড়া সংগঠক রুবাবা দৌলা। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে কাউন্সিলর মনোনীত করে বিসিবিকে চিঠি পাঠিয়েছে। তার অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে বিসিবির ২৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ পরিচালনা পর্ষদ গঠিত হলো।
গত ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত বিসিবি নির্বাচনের পর এনএসসি থেকে দুজন পরিচালক মনোনীত হন—ইসফাক আহসান ও ইয়াসির মোহাম্মদ ফয়সাল আশিক। তবে ইসফাক আহসানকে ঘিরে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার বিতর্ক দেখা দিলে এনএসসি তার মনোনয়ন বাতিল করে। ইসফাক আহসান ‘পদত্যাগ করেছেন’ বলে এনএসসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে আজ।
বিসিবির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই ইসফাককে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন ইসফাক আহসান। পরে অবশ্য মনোনয়ন না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে হেরে যান তিনি।
এছাড়া যুবলীগের সদস্য হিসেবে শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানানোর কিছু ছবিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে তার। তার বিতর্কিত বিষয়গুলো এনএসসির নজরে এলে তাকে পরিচালক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা এবং ২০২৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে সমালোচনার পর ইসফাকের পরিবর্তে রুবাবা দৌলাকে নতুন পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এনএসসি। তবে সেসময় তিনি তাৎক্ষণিকভাবে দায়িত্ব নেননি।
আজ বিসিবি পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে নতুন পরিচালক হিসেবে যোগ দিতে পারেন রুবাবা দৌলা। এনএসসি মনোনীত অপর পরিচালক হলেন ইয়াসির মোহাম্মদ ফয়সাল আশিক।
রুবাবা দৌলা বর্তমানে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ওরাকল বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি গ্রামীণফোন ও এয়ারটেল বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায়ে কাজ করেছেন।
ব্যবসায়ী পরিচয়ের পাশাপাশি রুবাবা দৌলা ক্রীড়া সংগঠক হিসেবেও সক্রিয় ছিলেন। ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি, তিনি বাংলাদেশ স্পেশাল অলিম্পিকসের বোর্ড সদস্য হিসেবেও যুক্ত ছিলেন।
ক্রিকেট অঙ্গনেও রুবাবার সম্পৃক্ততা ছিল। গ্রামীণফোন ২০০৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান স্পনসর ছিল। সেসময় গ্রামীণফোনের প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা ও বিপণন প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে (১৯৯৮–২০০৯) বিসিবির স্পনসর প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি হিসেবে পরিচিত মুখ ছিলেন তিনি।
বিসিবির ২৫ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদের ২৩ জন পরিচালক তিনটি ক্যাটাগরি থেকে নির্বাচিত হয়েছেন—জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা থেকে (ক্যাটাগরি-১) ১০ জন, ঢাকা মহানগরের ক্লাব থেকে (ক্যাটাগরি-২) ১২ জন এবং বিভিন্ন সংস্থা ও সাবেক ক্রিকেটারদের মধ্যে থেকে (ক্যাটাগরি-৩) ১ জন। বাকি দুজনকে মনোনয়ন দেয় এনএসসি।
এফপি/এমআই