আজ ৩ নভেম্বর। ঐতিহাসিক জেলহত্যা দিবস। জাতির ইতিহাসের অন্যতম বেদনাবিধুর ও কালিমালিপ্ত দিন। স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালের এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বন্দি অবস্থায় নিহত হন মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী চার জাতীয় নেতা বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামান।
পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে গত বছরের মতো এবারও জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে কোনো কর্মসূচি নেই।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর তাঁর ঘনিষ্ঠ চার সহকর্মী– জাতীয় চার নেতাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। পরবর্তী অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ক্যু-পাল্টা ক্যুর রক্তাক্ত অধ্যায়ে ৩ নভেম্বর সংঘটিত হয় নৃশংস ও বর্বরোচিত জেল হত্যাকাণ্ড। বঙ্গবন্ধু হত্যার চক্রান্তকারীদের পাঠানো ঘাতকরাই কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করে জাতির চার সূর্যসন্তানকে। কারাগারের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকাবস্থায় এমন হত্যাকাণ্ড ইতিহাসে বিরল।
জেল হত্যাকাণ্ডের পর ওই সময়ই লালবাগ থানায় একটি মামলা করা হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ ২১ বছর এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা হয়। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকার জেলহত্যা মামলার প্রক্রিয়া পুনরুজ্জীবিত করে।
এরপর ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত মামলাটির রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ২০ আসামির মধ্যে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড, ১২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অপর পাঁচজনকে খালাস দেওয়া হয়। ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল আপিল বিভাগের চূড়ান্ত সংক্ষিপ্ত রায়ে ২০০৮ সালের হাইকোর্টের রায় বাতিল এবং ২০০৪ সালের নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখা হয়।
এফপি/এমআই