প্রতিদিন সকালে ধূমায়িত চায়ের কাপে চুমুক দিয়েই শুরু হয় দিন। তারপর সারা দিন ধরে নানা ছুতোয় একের পর এই পানীয়ের কাপে চুমুক দেওয়া চলতেই থাকে। এটাই তো আমাদের রোজনামচা।
তবে এই চা প্রিয় বাঙালির একটা বড় অংশ কিন্তু দিনে কতবার চা খাওয়া উচিত, এই বিষয় সম্পর্কে ন্যূনতম খবর রাখেন না।
আর সেই কারণে অনেকেই একাধিক কাপ চায়ে চুমুক দেন। তারপর নানা জটিল সমস্যার ফাঁদে পড়েন।
তাই দিনে কত কাপ চা খেলে সুস্থ-সবল জীবন কাটানো যায়–এই বিষয়টি সম্পর্কে জানা উচিত। আর এ বিষয়ে পুষ্টিবিদরাও কী বলছে, চলুন জেনে নেওয়া যাক—
অতি প্রিয় চা
চায়ে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েডস, ক্যাটেচিনস ও পলিফেনলসের ভাণ্ডার।
শুধু তাই নয়, এতে কিছুটা পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, জিঙ্ক, ফসফরাস, ক্যালসিয়ামের মতো খনিজও উপস্থিত রয়েছে। তাই নিয়মিত চা খেলে যে শরীর ও স্বাস্থ্যের হাল ফিরবে, তা তো বলাই যায়!
বিশেষজ্ঞদের কথায়, চায়ে উপস্থিত নানা উপাদানের গুণে একাধিক রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকে। যেমন ধরুন, নিয়মিত চা খেলে কোলেস্টেরলকে বশে রাখা যায়। সেই সঙ্গে সুগার বিপৎসীমা ছাড়াতে পারে না।
এমনকি ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে।
শুধু তাই নয়, এতে মজুত কিছু উপাদানের গুণে কমে উৎকণ্ঠা। দূর হয় অবসাদ। তাই শরীর ও মনের হাল ফেরাতে চাইলে নিয়মিত এই পানীয়তে চুমুক দিতেই হবে।
দিনে কত কাপ চা খাওয়া উচিত
এই প্রশ্নের উত্তরে পুষ্টিবিদরা বলছেন, সারা দিনে মোটামুটি ৩ থেকে ৪ কাপ লিকার চা খাওয়া যায়।
এই নিয়মটা মেনে চললেই শরীর থাকবে সুস্থ-সবল। তবে ভুলেও এর থেকে বেশি পরিমাণে চা খাবেন না। তাতে কিন্তু পেটের স্বাস্থ্যের হাল বিগড়ে যাবে। যার ফলে পিছু নেবে গ্যাস, এসিডিটির মতো সমস্যা।
শুধু তাই নয়, নিয়মিত অত্যধিক পরিমাণে চা পান করলে শরীর গরম হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে। তাই আর ভুলেও কাপের পর কাপ চা খাবেন না।
দুধ চা
আমাদের মধ্য়ে অনেকের আবার লিকার চা মুখে রোচে না। তাই তারা শত নিষেধ সত্ত্বেও দুধ চা খান। আর সেই কারণেই তাদের পিছু নেয় পেটের সমস্যা। এমনকি তারা চা খেয়ে কোনো লাভও পান না। তাই চেষ্টা করুন দুধ চায়ের থেকে দূরত্ব বাড়িয়ে নেওয়ার।
তবে যারা একান্তই দুধ চা খেতে চান, তারা ফ্যাট লেস দুধ দিয়ে চা বানান। আর এই চা দিনে মাত্র ২ বার পান করুন। আশা করা যায়, এই নিয়মটা মেনে চললেই সুস্থ থাকবেন।
চিনি
অনেকেই চায়ে একগাদা চিনি মিশিয়ে পান করেন। যার ফলে তাদের ওজন বাড়তে শুরু করে। আর একবার ওজন বাড়লেই ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, হাই প্রেশারসহ একাধিক জটিল অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
তাই চেষ্টা করুন চায়ে চিনি মিশিয়ে না খাওয়ার। তার পরিবর্তে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো এই পানীয়তে কিছুটা মধু মেশাতে পারেন। তাতে কিছুটা হলেও উপকার পাবেন। তবে সব থেকে ভালো হয়, চিনি বা মধু ছাড়া চা পান করতে পারলে।
কফি
পুষ্টিবিদরা বলছেন, গ্রীষ্ম প্রধান দেশে নিয়মিত কফি খেলে কিন্তু শরীর গরম হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। এমনকি এই পানীয় খাওয়ার কারণে বাড়তে পারে ব্লাড প্রেশার। তাই যেন তেন প্রকারের কফি থেকে দূরত্ব রাখুন। আর যদি একান্তই খেতে হয়, তাহলে দিনে এক কাপ দুধ ছাড়া কফিতে চুমুক দিন।
এফপি/অ