ঢাকার অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসার হোতা ও যুবলীগের সাবেক নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে অস্ত্র মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার ঢাকার একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল এই রায় দেন।
ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক মো. ইব্রাহীম মিয়া আদালতে সম্রাটের অনুপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। অস্ত্র মামলায় এটাই সম্রাটের বিরুদ্ধে প্রথম সাজার রায়।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, সম্রাটের বিরুদ্ধে তার কাকরাইলের কার্যালয়ে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি রাখার অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে। এ অপরাধেই তাকে এই সাজা দেওয়া হলো।
বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন, পলাতক সম্রাটের এই সাজা তার গ্রেপ্তার বা আত্মসমর্পণের দিন থেকে কার্যকর হবে।
এর আগে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করে অস্ত্র আইনে সম্রাটের সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। বিচার চলাকালে আদালত রাষ্ট্রপক্ষের ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি এই ট্রাইব্যুনাল সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। ২০১৯ সালের ৬ নভেম্বর র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এই মামলায় সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছিল।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর র্যাব সদস্যরা কুমিল্লার ভারত সীমান্তের কাছের একটি বাড়ি থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের তৎকালীন সভাপতি সম্রাট ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী এনামুল হক আরমানকে গ্রেপ্তার করে।
ঢাকায় বিভিন্ন ক্লাবে র্যাবের ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হলে সম্রাটের নাম আলোচনায় আসে। গ্রেপ্তারের পর তাকে যুবলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।
সম্রাটকে এরপর ঢাকায় আনা হয় এবং র্যাব তার বসবাসের ও রাজনৈতিক কার্যালয়ে অভিযান চালায়। র্যাব সম্রাটকে তার কাকরাইলের কার্যালয়েও নিয়ে যায়।
তখন র্যাবের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছিল, কাকরাইলের ওই কার্যালয় থেকে দুটি নির্যাতনের যন্ত্র, পাঁচটি গুলিসহ একটি পিস্তল, দুটি ক্যাঙারুর চামড়া, ১,১৬০টি ইয়াবা বড়ি এবং ১৯ বোতল বিদেশি মদ জব্দ করা হয়।
সে সময় র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত বন্যপ্রাণীর চামড়া রাখার দায়ে সম্রাটকে ছয় মাস এবং অবৈধ মদ রাখার দায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।
এ ছাড়া মাদক, অর্থ পাচার ও দুর্নীতির মামলায় ঢাকার অন্য তিনটি আদালত আগেই সম্রাটের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন।
এফপি/অ