শিরোনাম: |
প্রতিষ্ঠার পর থেকে স্বতন্ত্র শ্রেণিকক্ষ পায়নি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট (এইচআরএম) ডিসিপ্লিন। বর্তমানে ছয়টি ব্যাচের বিপরীতে বরাদ্দ রয়েছে মাত্র একটি সংকীর্ণ শ্রেণিকক্ষ। দীর্ঘদিনের এই সংকটসহ অপর্যাপ্ত অবকাঠামো ও জনবলের অভাব নিরসনের দাবিতে পদযাত্রা ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন ডিসিপ্লিনটির শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে একটি পদযাত্রা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা এবং ব্যবসায় প্রশাসন স্কুলের ডিন, ছাত্রবিষয়ক পরিচালক, রেজিস্ট্রার, ট্রেজারার, উপ-উপাচার্য, উপাচার্যের দপ্তরে স্মারকলিপি জমা দেন তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের যৌক্তিক দাবিগুলো পূরণের জন্য প্রশাসনের কাছে লিখিত প্রতিশ্রুতি দাবি করেন।
ডিসিপ্লিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২৪০ জন শিক্ষার্থীর জন্য শ্রেণিকক্ষ রয়েছে মাত্র একটি যা ব্যবহারে অনুপযোগী। মোট ১২ জন শিক্ষকের জন্য কক্ষ আছে ৫টি। কক্ষ সংকটের ফলে একই রুমে ২ জন শিক্ষক ও একজন শিক্ষিকা। সেমিনার ও এমআইএস ল্যাব নেই যার ফলে শিক্ষা্র্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের দেওয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়, ছয়টি ব্যাচের জন্য বর্তমানে যে একটি মাত্র শ্রেণিকক্ষ রয়েছে, সেটি আগে শিক্ষকদের লাউঞ্জ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। সংকীর্ণ ওই কক্ষে একসঙ্গে একাধিক ব্যাচের ক্লাস নেওয়া অসম্ভব। এর ফলে প্রায়ই ক্লাস বাতিল করতে হয়, যা তাদের শিক্ষাজীবনকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
ডিসিপ্লিনের সার্বিক একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমও একটি মাত্র কক্ষ থেকে পরিচালিত হওয়ায় দাপ্তরিক গোপনীয়তা রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন। তারা বলেন, 'অধিকাংশ শিক্ষকের জন্য আলাদা কোনো বসার জায়গা নেই। ফলে তাদের সঙ্গে আমাদের একাডেমিক যোগাযোগ ও পরামর্শ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পর্যাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী না থাকায় দাপ্তরিক কাজকর্মেও স্থবিরতা নেমে এসেছে।'
সংকট নিরসনে শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপিতে বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট দাবি তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ছয়টি ব্যাচের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক স্থায়ী শ্রেণিকক্ষ বরাদ্দ, একটি আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব, শিক্ষার্থীদের জন্য কমনরুম, শিক্ষকদের জন্য পৃথক কক্ষ, মিটিং রুম এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ।
আন্দোলনরত একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, 'সমস্যাগুলো নিয়ে এর আগেও আমরা বারবার প্রশাসনকে জানিয়েছি। প্রতিবারই শুধু আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আমরা আর আশ্বাসে বিশ্বাস রাখতে পারছি না। এবার আমাদের দাবি পূরণে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা সহ লিখিত সিদ্ধান্ত চাই।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হারুনর রশীদ খান এ বিষয়ে জানান যে, ৪ নং একাডেমিক ভবনের নির্মাণকাজ শেষের পর্যায়ে রয়েছে। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ দ্রুত কাজ শেষ করার বিষয়টি আন্তরিকতার সাথে দেখছে। ভবনটির কাজ সম্পন্ন হলে ৩ নং একাডেমিক ভবন থেকে বেশ কয়েকটি ডিসিপ্লিন সেখানে সরিয়ে নেওয়া হবে। এর ফলে এইচআরএমসহ অন্যান্য ডিসিপ্লিনগুলোর চলমান সংকট দূর হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এফপি/অআ