আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন নবীন প্রজন্মের বা জেন-জি প্রজন্মের আনসার ও ভিডিপি সদস্যরা। বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এবারের নির্বাচনে শুধুমাত্র ডিজিটাল ডাটাবেজ যাচাই করা প্রশিক্ষিত ও যোগ্য সদস্যদেরই দায়িত্ব দেওয়া হবে, যাতে কোনো স্বার্থন্বেষী মহল বা সন্দেহজনক ব্যক্তি নির্বাচনী কার্যক্রমে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর খিলগাঁওয়ে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি সদর দপ্তরে ‘আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন প্রস্তুতি ও বাজেট’ বিষয়ে আয়োজিত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বাহিনীর উপমহাপরিচালক (প্রশাসন) কর্ণেল মো. ফয়সাল আহাম্মদ ভূঁইয়া এসব তথ্য জানান।
সভায় উপমহাপরিচালক (প্রশাসন) কর্ণেল ফয়সাল আহাম্মদ ভূঁইয়া বলেন, “অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের দায়িত্ব পালনের চিত্র হবে ভিন্ন ও অধিক পেশাদার।”
তিনি বলেন, “বাহিনীর মহাপরিচালকের নির্দেশনা অনুযায়ী, নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে অংশগ্রহণকারী সদস্যদের পোশাকের মান, সক্ষমতা ও সুষ্ঠু ডেটাবেজ এর মাধ্যমে নিবন্ধন যাচাইপূর্বক দায়িত্বে নিয়োজিত করা হবে। ফলে, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বা স্বার্থন্বেষী মহলের প্রভাব মুক্ত থেকে পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনে সফলকাম হবে।
বিগত তিন নির্বাচনে ভোট কারচুপিতে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলার বাহিনীর পাশাপাশি আনসারের উপরও দায় আসে। এক্ষেত্রে আসন্ন নির্বাচনে আনসার বাহিনী কী নিরপেক্ষভাবে তার দায়িত্ব পালন করতে পারবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, স্বার্থন্বেষী মহলের অপচেষ্টা সবসময় থাকবে। তবে আমরা আমাদের এবারের নির্বাচনে যারা নিয়োজিত হবে তাদের ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি করা হয়েছে। সন্দেহজনক কোনো ব্যক্তি যেন নিয়োজিত না হয় এ বিষয়ে আমরা শতভাগ চেষ্টা করব।
তিনি আশ্বস্ত করেন যে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে শতভাগ প্রশিক্ষিত আনসার ও ভিডিপি সদস্য-সদস্যা দায়িত্ব পালন করবেন, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ হবে নবীন প্রজন্ম বা জেন-জি থেকে।
নির্বাচনী বাজেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “রাষ্ট্রের সার্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে যৌক্তিকতার সাথে নির্বাচনী বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, কতিপয় সংবাদ মাধ্যমে এ বাহিনীর নির্বাচন সংক্রান্ত বাজেট প্রসঙ্গে একটি ভিন্ন রকমের প্রচার ইতিমধ্যে হয়েছে, যা বাহিনী ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে।
সভায় উপমহাপরিচালক আরও জানান, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পাশাপাশি আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী হতে ১২ জন কেন্দ্র নিরাপত্তা সদস্য থাকবে। এছাড়াও, প্রিজাইডিং অফিসারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি কেন্দ্রে অস্ত্রসহ একজন আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে। যার ফলে, সম্ভাব্য প্রায় ৪৫ হাজার ভোট কেন্দ্রের প্রতিটিতে ১৩ জন করে আনসার ভিডিপি সদস্য-সদস্যা দায়িত্ব পালন করবেন। তাছাড়াও, স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্য।
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, অতীত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন বাস্তবায়নে সরকারি প্রতিজ্ঞার বাস্তবায়নে একটি শক্তিশালী ভূমিকা পালন করবে ইনশাআল্লাহ।
নির্বাচনী প্রস্তুতি ও বাজেট সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ এই মতবিনিময় সভায়, আরও উপস্থিত ছিলেন মো. সাইফুল্লাহ রাসেল (উপমহাপরিচালক, অপারেশন্স), মুহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী (পরিচালক, অপারেশন্স), মো. আশরাফুল ইসলাম (পরিচালক, প্রশাসন-কিউ), মো. জাহিদ হোসেন (পরিচালক, সিএইচটি - অপস) ও অন্যান্য কর্মকর্তাগণ।
এফপি/এমআই