মালচিং ও মাচা পদ্ধতিতে অসময়ে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করে লাভবান হয়েছেন নেত্রকোনার কৃষকরা। ফলন ভালো হওয়ায় এবং বাজারদর ভালো থাকায় উৎপাদন খরচ বাদে অন্তত দ্বিগুণ লাভ হবে বলে জানান চাষীরা। তাদের দেখে এই জাতীয় তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন স্থানীয় কৃষকরা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার গড়াডোবা ইউনিয়নের পাতারিয়া গ্রামের কৃষক আলী উসমান। তার কলেজ পড়ুয়া ছেলে সারোয়ার ইউটিউব দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে গত দু-তিন বছর আগে বাবাকে নিয়ে কিছু জমিতে মালচিং ও মাচা পদ্ধতিতে কিংস সুগার জাতের তরমুজ চাষ শুরু করেন। প্রথমবারই লাভের মুখ দেখেন তারা। এ বছর তারা দুই একর ২০ শতক জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। তাদের দেখে এ বছরই প্রথমবারের মতো ৩৩ শতক জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন একই এলাকার বাসিন্দা সুমন মিয়া।
চাষীরা জানান, এ বছর পরিবেশ অনুকুলে থাকায় তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতিটি তরমুজ দুই থেকে পাঁচ কেজি ওজনের হয়েছে। প্রতি কেজি তরমুজ পাইকারী ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এরইমধ্যে নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারী ক্রেতারা জমি থেকে শুরু থেকেই সব তরমুজ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
আরোও জানা গেছে, কৃষক সুমন মিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় তরমুজের প্রদর্শনী করেছেন। তার ৩৩ শতক জমিতে তরমুজ চাষে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৯০ হাজার টাকা। ৬৫ দিনের মধ্যেই তার চাষকৃত তরমুজ বিক্রির উপযোগী হয়ে উঠেছে এবং তিনি বিক্রিও শুরু করেছেন। দ্বিগুণ লাভের প্রত্যাশা করছেন কৃষক সুমন। তরমুজ চাষে লাভ দেখে আগ্রহী হচ্ছেন স্থানীয় অন্য কৃষকরাও।
এদিকে কেন্দুয়া উপজেলাবাসীর অনেকে জানান, এই পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করে লাভবান হওয়ার খবর শুনে তাদের মধ্যেও আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। তারা ভবিষ্যতে একইভাবে তরমুজ চাষ করতে চান, যেন তারাও আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারেন।
এবিষয়ে কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার বলেন, গ্রীষ্মকালীন তরমুজ গরম ও শীত সহনশীল একটি জাত। এ জাতীয় তরমুজ চাষে এখানকার কৃষকরা বেশ লাভবান। আমরা তাদের সার্বিক সহযোগিতাসহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। কৃষকরাও তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নেত্রকোনা জেলা কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, জেলার দশটি উপজেলায় এ বছর মোট ২১ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। যা থেকে অন্যান্য ফসলের তুলনায় বেশি লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।
এফপি/রাজ