Dhaka, Thursday | 18 September 2025
         
English Edition
   
Epaper | Thursday | 18 September 2025 | English
আমেরিকার সিকিউরিটি ডিভাইসের মাদারবোর্ড রপ্তানি করছে ওয়ালটন
নৌকা ভ্রমণে গিয়ে নিখোঁজ, দু’দিন পর নদীতে মিলল মরদেহ
আবাসন খাত রক্ষাই অর্থনীতির সুরক্ষা
১৮ দিন পর হাসপাতাল ছাড়লেন নুর
শিরোনাম:

হারিয়ে যাচ্ছে চান্দিনার ঐতিহ্যবাহী তালগাছ, চিন্তিত পরিবেশবিদরা

প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১:২২ পিএম  (ভিজিটর : ৩০)

একসময় কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সারি সারি তালগাছ ছিল এই এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। গ্রীষ্মের দুপুরে পথিকের আশ্রয়স্থল, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঢাল এবং জীববৈচিত্র্যের আশ্রয় হিসেবে এসব তালগাছের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। কিন্তু কালের বিবর্তনে এবং মানুষের উদাসীনতায় সেই ঐতিহ্যবাহী তালগাছগুলো এখন দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে। এক সময়ের সবুজে ঘেরা তালবন এখন বিরান ভূমিতে পরিণত হচ্ছে, যা স্থানীয়দের পাশাপাশি পরিবেশবিদদের মধ্যেও গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

স্থানীয় প্রবীণদের মতে, এক দশক আগেও চান্দিনার প্রায় প্রতিটি গ্রামেই শত শত তালগাছ দেখা যেত। বিশেষ করে ক্ষেত-খামারের আইলে, রাস্তার পাশে এবং বাড়ির উঠানে তালগাছের সারি ছিল এক সাধারণ দৃশ্য। এসব তালগাছের ফল ছিল এখানকার মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয়। গরমের দিনে তালের শাঁস বা পাকা তালের পিঠা-পায়েস ছিল মানুষের নিত্যদিনের খাবার। এছাড়া, তালপাতার পাখা এবং নানা ধরনের হস্তশিল্প তৈরির কাজেও ব্যবহার করা হতো।

তবে, আধুনিকায়ন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ এবং নতুন সড়ক নির্মাণের কারণে এই তালগাছগুলো কেটে ফেলা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই রাস্তার সম্প্রসারণের জন্য অথবা ইটভাটা ও শিল্প-কারখানার প্রয়োজনে গাছগুলো নির্বিচারে কাটা হচ্ছে। এছাড়া, অনেকে অর্থনৈতিক লাভের আশায় পুরোনো গাছ কেটে জমি বিক্রি করে দিচ্ছেন। নতুন করে তালগাছ লাগানোর প্রবণতাও চোখে পড়ার মতো কমে গেছে। এর ফলে, একদিকে যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে পরিবেশের ভারসাম্যও মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।

পরিবেশবিদদের মতে, তালগাছ বজ্রপাত নিরোধক হিসেবে কাজ করে এবং মাটির ক্ষয় রোধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তালগাছ কমে যাওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে বজ্রপাতে প্রাণহানির ঘটনাও বেড়েছে। একই সঙ্গে, তালগাছকে আশ্রয় করে থাকা বিভিন্ন ধরনের পাখি ও প্রাণীর আবাসস্থলও নষ্ট হচ্ছে। এর ফলে স্থানীয় জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে।

চান্দিনা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, আমরা তালগাছের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। কৃষকদের নতুন করে তালগাছ রোপণে উৎসাহিত করা হচ্ছে। তবে, শুধু সরকারি উদ্যোগই যথেষ্ট নয়। স্থানীয় জনসাধারণকেও এগিয়ে আসতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া এই ঐতিহ্য বাঁচানো সম্ভব নয়।

বর্তমানে কিছু তরুণ পরিবেশকর্মী তালগাছ সংরক্ষণে কাজ শুরু করেছেন। তারা গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালবীজ রোপণ করছেন এবং তালগাছের উপকারিতা সম্পর্কে মানুষকে বোঝাচ্ছেন। তাদের এই প্রচেষ্টা আশার আলো দেখালেও, তা সামগ্রিক ক্ষতির তুলনায় খুবই সামান্য। স্থানীয়দের বিশ্বাস, যদি এখনই এই বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে চান্দিনার ঐতিহ্যবাহী তালগাছ অদূর ভবিষ্যতে কেবলই ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পাবে।

এফপি/রাজ
সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝