আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে কুমিল্লার চান্দিনার কৃষির চিত্র। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পাচ্ছেন কৃষকরা। এই পদ্ধতিতে কম খরচে অধিক ফলন হওয়ায় বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে আগ্রহ বাড়ছে তাদের। শুধু তাই নয়, উৎপাদিত সবজি বিক্রি করে আর্থিকভাবেও স্বাবলম্বী হচ্ছেন তারা।
কৃষিবিদদের মতে, মালচিং পদ্ধতি হলো এক ধরনের আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব চাষাবাদ প্রক্রিয়া। এই পদ্ধতিতে মাটির উপরিভাগকে পলিথিনের বিশেষ শিট বা অন্যান্য জৈব পদার্থ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। এর ফলে সূর্যের তাপ ও বাতাসে মাটির রস দ্রুত উবে যেতে পারে না, যার কারণে সেচ অনেক কম লাগে। এছাড়া, এই আচ্ছাদন থাকার কারণে জমিতে আগাছা জন্মাতে পারে না, ফলে নিড়ানি দেওয়ার শ্রম ও খরচ দুটোই কমে যায়। কীটনাশকের ব্যবহারও কম হয়, কারণ পোকার আক্রমণ অনেকাংশে কমে যায়। ফলে উৎপাদিত সবজি হয় সম্পূর্ণ বিষমুক্ত ও নিরাপদ।
উপজেলার গল্লাই ইউনিয়নের কৃষক জহিরুল আলম আবুল বাশার মুন্সি জানান, তিনি মালচিং পদ্ধতিতে টমেটো, করলা, শসা, ও লম্বা বেগুন চাষ করেছেন। তিনি বলেন, “প্রথম দিকে মালচিং পেপার ও আনুষঙ্গিক কিছু খরচ বেশি মনে হলেও, পরে সেচ, সার ও কীটনাশক বাবদ খরচ অনেক কমে যায়। তাছাড়া ফলনও দ্বিগুণ হয়। এতে করে সামগ্রিকভাবে লাভের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়।”
চান্দিনা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, মালচিং পদ্ধতি একটি যুগোপযোগী কৃষি প্রযুক্তি। এই পদ্ধতিতে ফসল চাষ করলে কৃষকের উৎপাদন খরচ যেমন কমে, তেমনি ফলন বাড়ে। এতে কৃষকদের লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কৃষি বিভাগ কৃষকদের এই পদ্ধতি সম্পর্কে সচেতন করতে এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানে কাজ করছে।
বিশেষ করে টমেটো, বেগুন, মরিচ, শসা, করলা, এবং বিভিন্ন ধরনের উচ্চমূল্যের সবজি চাষের জন্য এই পদ্ধতি খুবই উপযোগী বলে জানা যায়। বর্ষার সময়েও এই পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে ভালো ফলন পাওয়া যায়। মালচিং পদ্ধতি চান্দিনার কৃষিক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
এফপি/রাজ