Dhaka, Tuesday | 4 November 2025
         
English Edition
   
Epaper | Tuesday | 4 November 2025 | English
ডেঙ্গু কেড়ে নিল আরো ৪ প্রাণ
এই নির্বাচন আমার শেষ নির্বাচন: মির্জা ফখরুল
বেতন বাড়ল নারী ক্রিকেটারদের, কে কত পাচ্ছেন
আজকের স্বর্ণের দাম
শিরোনাম:

চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স; আলোহীন করিডোরে কষ্টের দীর্ঘশ্বাস

প্রকাশ: বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫, ২:০৭ এএম  (ভিজিটর : ৪৭৩)

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করিডোরে দিনের আলোতেও যেন ভর করছে অদ্ভুত এক অন্ধকার। ফ্যানহীন ওয়ার্ড, ম্লান আলো আর গরমে হাঁসফাঁস করা রোগী। এখানে প্রতিদিনের দৃশ্য হয়ে উঠেছে রোগীর কষ্ট আর অপ্রতুল সেবার এক মিশ্রণ।

সদ্য জন্ম নেওয়া সন্তানকে নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা এক মা ফ্যানহীন রুমে ঘামের সঙ্গে লড়াই করছেন। পাশে দাঁড়িয়ে তার স্বামী হাতপাখা নেড়ে স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে স্বস্তি দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এসময় তিনি বলেন, “চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে এনেছিলাম। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় আমার স্ত্রী ও সদ্য জন্ম নেওয়া সন্তান গরমে প্রচণ্ড কষ্ট পাচ্ছে। সরকারি হাসপাতালে এমন অবস্থা হবে- কল্পনাও করিনি।”

পুরুষ ওয়ার্ডে শুয়ে আছেন শফিউল আলম নামের ষাটোর্ধ এক বৃদ্ধ। দীর্ঘদিন হাঁপানিতে ভুগছেন। বিদ্যুৎ না থাকায় অক্সিজেন মেশিন ব্যবহার করা যায়নি কয়েক ঘণ্টা। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “মনে হয় বুক ফেটে যাবে।” পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেমেয়েরা উৎকণ্ঠায় দৌড়ঝাঁপ করলেও কিছুই করার নেই।

বাহির থেকে হাসপাতালটি পরিপাটি ও স্বাভাবিক মনে হলেও ভেতরের চিত্র ভিন্ন। সাধারণ রোগীরা সরকারি এ হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসলে দালালদের কারণে অন্য হাসপাতালে পাঠানোর চেষ্টায় তারা ব্যস্ত থাকেন। উন্নয়ন কাজে অনিয়ম, মানহীন সংস্কার ও অদক্ষতার ছাপ হাসপাতালের প্রতিটি কোণে স্পষ্ট। ওষুধ সংকটের অজুহাতে রোগীদের স্বজনদের বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে হয়। অপরিষ্কার বাথরুমের কারণে হাসপাতাল হয়ে উঠেছে ভোগান্তির প্রতীক।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের অফিসিয়াল ট্রান্সফর্মার এক সপ্তাহ ধরে বিকল। করিডোর, ওয়ার্ড, ল্যাব সবই অন্ধকারে। গরমে হাঁসফাঁস করছে রোগীরা। হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “রোগীদের ভোগান্তি চোখের সামনেই ঘটছে। বিদ্যুৎ না থাকায় চিকিৎসার পরিবেশও ভেঙে পড়েছে। অথচ পিডিবি নানান অজুহাতে সময় ক্ষেপন করছে।”

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জয়নুল আবেদীন বলেন, “ট্রান্সফর্মারের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। পিডিবিকে বারবার জানানো হয়েছে। তাদের গাফেলতির কারণে রোগী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।”

চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এই ঘটনা বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর দীর্ঘদিনের সমস্যার প্রতিচ্ছবি। বিদ্যুৎ বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিভাগের মধ্যে কার্যকর সমন্বয় না থাকায় রোগী ও স্বজনদের দুর্ভোগের অবসান হয় না। অভ্যন্তরীণ তদারকির কমতির কারণে সমস্যা দীর্ঘসময় ধরে চলমান।

স্থানীয়রা বলছেন, অবিলম্বে স্থায়ী ট্রান্সফর্মার ও অবকাঠামোগত সংস্কার জরুরি। হাসপাতালের ভেতরে দালালমুক্ত পরিবেশ, নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ এবং কার্যকর হটলাইন বা মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে। এসব ব্যবস্থা না হলে সরকারি হাসপাতাল মানুষের ভরসার জায়গা থেকে ভোগান্তির প্রতীক হয়ে দাঁড়াবে।

এদিকে, গত এক সপ্তাহ যাবত বিদ্যুৎ বন্ধ থাকার বিষয়ে জানতে চকরিয়া বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ (পিডিবি)র নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এফপি/রাজ
সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝