Dhaka, Monday | 25 August 2025
         
English Edition
   
Epaper | Monday | 25 August 2025 | English
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: এক মাস পর আরও এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু
৮০ টাকায় আমদানি করা কাঁচা মরিচের কেজি বাজারে ৩০০
মাদকাসক্ত ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন বাবা
৮০ শতাংশ বিবাহিত পুরুষ মানসিক নির্যাতনের শিকার, প্রতিকার মেলে না কোথাও
শিরোনাম:

চকরিয়ায় থানা হেফাজতে যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় ওসি সহ ৪ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

প্রকাশ: রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫, ৬:০১ পিএম  (ভিজিটর : ৮২)

কক্সবাজারের চকরিয়ার থানাহাজতে দুর্জয় চৌধুরী (২৫) নামে এক যুবকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। পুলিশের দাবি, দুর্জয় শার্ট দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলছেন- কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে থাকা থানাহাজতে কীভাবে সম্ভব হলো এমন ঘটনা?

ঘটনার মাত্র এক দিনের মাথায় চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলামকে বদলি করা হয়েছে। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব নিচ্ছেন জেলা পুলিশের পরিদর্শক তৌহিদুল আনোয়ার। এর আগে তিন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার এবং তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় প্রশ্ন জোরদার হচ্ছে- ঘটনায় পুলিশের অবহেলা ছিল, নাকি অন্য কোনো রহস্য আড়াল করার চেষ্টা চলছে?

চকরিয়া সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর ছিলেন দুর্জয় চৌধুরী। অভিযোগ- বিদ্যালয়ের ২ লাখ ৮৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার রাতে প্রধান শিক্ষকের লিখিত অভিযোগের পর পুলিশ তাঁকে হাজতে নেয়। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পরেই পুলিশ জানায়, দুর্জয় আত্মহত্যা করেছেন।

দুর্জয়ের বাবা কমল চৌধুরীর প্রশ্ন, যে ছেলে সকালে হাসিখুশি ছিল, সে থানায় গিয়ে কেন ফাঁস দেবে? হাজতখানায় কি পুলিশ পাহারা থাকে না?

একাধিক স্থানীয় আইনজীবী বলেন, হাজতে আত্মহত্যার ঘটনায় আমরা হতবাক। হাজতখানার প্রতিটি কোণেই থাকে সিসিটিভি নজরদারি, গ্রিল ও বারগুলোতে কোনো ধরনের কাপড় বা দঁড়ি বেঁধে ঝুলে পড়ার সুযোগ থাকে না। ফলে এই মৃত্যু নিয়ে পুলিশের ব্যাখ্যা যথেষ্ট প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে।

চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) অভিজিৎ দাশ বলেন, দুর্জয় আত্মহত্যা করেছেন। তবে কীভাবে ঘটেছে তা জানতে তদন্ত চলছে। জনস্বার্থে ওসিকে বদলি করা হয়েছে।

কক্সবাজার মানবাধিকার ফোরামের এক নেতা বলেন, দেশে প্রায়ই থানাহাজতে মৃত্যু ঘটছে, অথচ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তদন্তের ফলাফল প্রকাশ্যে আসে না। তিনি বলেন, হাজতে মৃত্যু মানেই পুলিশি অবহেলা বা নির্যাতনের সম্ভাবনা। এই ঘটনায় স্বচ্ছ তদন্ত না হলে সাধারণ মানুষের আস্থা আরও কমে যাবে।

নিহতের পরিবার নিরপেক্ষ বিচার চায়। স্থানীয়রা বলছেন, টাকা আত্মসাতের অভিযোগটি আগে তদন্ত সাপেক্ষে প্রমাণিত হতো, তার আগেই অভিযুক্তকে এভাবে মৃত্যুতে ঠেলে দেওয়া রহস্যজনক।

জেলা পুলিশ ইতোমধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দীন চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে। তবে সচরাচর দেখা যায়, পুলিশের অভ্যন্তরীণ তদন্তে সুনির্দিষ্ট দায় কারও ঘাড়ে চাপানো হয় না। এ কারণেই স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তুলেছেন স্থানীয় আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মীরা।

দুর্জয় চৌধুরীর মৃত্যু শুধু একটি থানার ঘটনা নয়, বরং থানা হাজতে নিরাপত্তা ও জবাবদিহিতার বড় প্রশ্ন। সত্যিই কি তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন, নাকি এ মৃত্যু অন্য কোনো চাপা রাখা ঘটনার আড়াল—এর উত্তর খুঁজছে চকরিয়ার মানুষ। এখন সবার চোখ তদন্ত কমিটির দিকে।

এফপি/রাজ
সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝