ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি থাকলেও নতুন কোনো ইমপোর্ট পারমিট (আইপি) দেওয়া হচ্ছে না। আগের আইপি পাওয়া আমদানিকারকরা সাময়িকভাবে পেঁয়াজ আনতে পারছেন, কিন্তু বাজারে দাম এখনও ঊর্ধ্বমুখী। খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়, যা সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে।
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের কাস্টমস ও সিএন্ডএফ এজেন্ট সূত্র জানায়, সর্বশেষ ২৭ মার্চ ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এরপর অতিবৃষ্টিতে স্থানীয় ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বাজারে পেঁয়াজসহ সবজির দাম বেড়ে যায়। একপর্যায়ে সাতক্ষীরার খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি দাম ৮০ টাকায় পৌঁছে যায়।
দাম নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আগের আইপি পাওয়া আমদানিকারকরা ১৭ আগস্ট থেকে ভোমরা বন্দরে পেঁয়াজ আনা শুরু করেন। ওই দিন সাতটি ট্রাকে ২০২ মেট্রিক টন পেঁয়াজ দেশে প্রবেশ করে। এরপর পাঁচ দিনে মোট ১২৬ ট্রাকে ৩ হাজার ৬৫০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ এসেছে। তবে খুচরা বাজারে সরাসরি প্রভাব কম থাকায় সাধারণ ক্রেতারা এখনও কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।
খুচরা ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করছেন, ভোমরায় ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি হওয়া আমদানিকৃত পেঁয়াজ স্থানীয় বাজারে না এসে সরাসরি রাজধানী ও অন্যান্য জেলায় চলে যাচ্ছে। ফলে সাতক্ষীরার সাধারণ ক্রেতারা বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রণের সুবিধা পাচ্ছেন না।
ভোমরার একাধিক ব্যবসায়ীরা বলেন, আমরা আগের আইপি অনুযায়ী পেঁয়াজ আনতে পারছি। কিন্তু নতুন কোনো অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। বাজারে সরবরাহ সীমিত, তাই দাম নিয়ন্ত্রণে আসছে না। আমাদের কাছে যথেষ্ট পণ্য থাকলেও, খুচরা বাজারে পৌঁছানো সহজ নয়। সাধারণ ক্রেতাদের সুবিধা পৌঁছে দেওয়া সরকারের দায়িত্ব।
ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু মুসা জানান, আগের আইপি থাকা আমদানিকারকরা পেঁয়াজ আনছেন, কিন্তু নতুন কোনো অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। দ্রুত পদক্ষেপ না হলে সরবরাহের ঘাটতি আরও বাড়বে।
ইমপোর্ট পারমিট বা আইপি হলো সরকারের দেওয়া একটি অনুমতিপত্র, যার মাধ্যমে বিদেশ থেকে কোনো পণ্য আনুষ্ঠানিকভাবে আমদানি করা যায়। কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রে এটি সরকার নির্ধারিত নিয়ম ও নিয়ন্ত্রণ অনুযায়ী ইস্যু করা হয়। আইপিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে কোন দেশ থেকে পণ্য আনা যাবে, কত পরিমাণে আনা যাবে এবং পণ্য কত দিনের মধ্যে দেশে প্রবেশ করবে। বর্তমানে নতুন কোনো আইপি দেওয়া হচ্ছে না। আগের আইপি পাওয়া আমদানিকারকরাই সীমিত পরিমাণে পণ্য আনতে পারছেন। এর ফলে বাজারে সরবরাহ সীমিত রয়েছে এবং দাম ঊর্ধ্বমুখী। সরকার চাইলে আইপি দিয়ে বাজারে সরবরাহ বাড়াতে পারে এবং দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে।
এফপি/রাজ