Dhaka, Tuesday | 4 November 2025
         
English Edition
   
Epaper | Tuesday | 4 November 2025 | English
ডেঙ্গু কেড়ে নিল আরো ৪ প্রাণ
এই নির্বাচন আমার শেষ নির্বাচন: মির্জা ফখরুল
বেতন বাড়ল নারী ক্রিকেটারদের, কে কত পাচ্ছেন
আজকের স্বর্ণের দাম
শিরোনাম:

সুদের টাকা দিতে না পারায় বসত ঘরে তালা

প্রকাশ: শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৫, ১২:৩৩ পিএম  (ভিজিটর : ৮৫)

নোয়াখালী হাতিয়ায় সুদের টাকার জন্য রিক্সাচলক একরামের বসত ঘরে তালা লাগিয়ে দিয়েছে তোফায়েল আহম্মেদ নামে এক সুদে কারবারি। এতে গত আটদিন ধরে খোলা বারান্দায় সন্তানদের নিয়ে ঝড়বৃষ্টিতে রাত্রি যাপন করছে পরিবারটি।

শুক্ররার (২২ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার চরকিং ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের চরবগুলা গ্রামে গেলে দেখা যায় ঘরের সামনে বৃদ্ধ শাশুড়ি ও সন্তানদের নিয়ে বসে আছে রিক্সাচালকের স্ত্রী। তাদের দুটি বসত ঘরে ঝুলছে তালা।

স্থানীয়রা জানান, রিক্সাচালক একরাম হোসেন চর বগুলা গ্রামে সরকারি প্রকল্পের একটি ঘরে স্ত্রী সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছে। নিজের প্রয়োজনে সে একই এলাকার ছালামত উল্লার ছেলে তোফায়েল আহম্মদ থেকে মাসিক লাভের টাকা দেওয়ার চুক্তিতে কিছু টাকা নেয়। রিক্সাচালক একরাম দারিদ্রতার কারণে দীর্ঘদিন চুক্তি অনুযায়ী লাভের টাকা দিতে না পারায় তোফায়েল তার ঘরে তালা লাগিয়ে দেয়। এতে করে তার পরিবার ঝড়বৃষ্টির মধ্যে খোলা বারান্দায় মানবেতর জীবনযাপন করছে।

রিক্সাচালক একরাম হোসেন বলেন, ২০১৫ সালে আমার রিক্সার সাথে রাস্তায় দুর্ঘটনায় দুইজন লোক আহত হয়। তাদের চিকিৎসা করতে গিয়ে আমি তোফায়েল থেকে লাভের উপর ৬০ হাজার টাকা নিই। ২০১৯ সালে আরো ১১ হাজার নিই। ২০২৩ সাল পর্যন্ত আমি সর্বমোট ১ লাখ ৮৬ হাজার টাকা পরিশোধ করি। এই টাকা দিতে গিয়ে আমি কয়েকটি এনজিও থেকে ঋণ নিতে হয়েছে। সেই ঋণের টাকা পরিশোধ করতে আমার জীবন শেষ। ২০২৩ সাল থেকে আমি আর সুদের টাকা টানতে পারছিলাম না। এক পর্যায়ে আমি রাতের আধাঁরে পালিয়ে যাই। কিছুদিন পর আমি বাড়িতে আসলে সে কয়েকজন লোক নিয়ে আমাকে বাড়ী থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করে এবং জোরপূর্বক ৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকার স্টাম্পে স্বাক্ষর নেয়। আমি আবারো চট্টগ্রাম গিয়ে রিক্সা চালিয়ে সামান্য যা কিছু উপার্জন করি বাড়িতে পাঠালে কোন রকম আমার সংসার চলে।

গত কয়েকদিন আগে আমার মা অসুস্থ হয়ে পড়ায় আমার স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে হাতিয়ার বাহিরে যাই। এই সুযোগে তোফায়েল আমার ঘরের সকল মালামাল বের করে নিয়ে তালা মেরে দেয়। আমার স্ত্রী ফিরে আসলে তার কাছে চাবির জন্য গেলে সে চাবি দেয়নি। আট দিন ঘরে তালা দেওয়ায় রারান্দায় অন্যের কাছ থেকে ধার নেওয়া একটি মশারী ও একটি বিছানা নিয়ে কোনরকম রাত্রিযাপন করছে। রান্নাবান্না বন্ধ, পাশের লোকজন সামান্য যা দেয় তা খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছে।

রিক্সাচালক একরাম হোসেনের স্ত্রী বলেন, আমি ঘরে ঢুকতে না পেরে খোলা রারান্দায় ছোট ছোট বাচ্চাদেরকে নিয়ে রাত্রি যাপন করছি। বৃষ্টির কারণে বাচ্চাদের ঠান্ডা লেগে গেছে। আটদিন পর আজকে পাশের ঘর থেকে পাতিল নিয়ে ভাত রান্না হয়েছে। এলাকার অনেকের কাছে গিয়েছি। কেউ আমাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসেনি।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পল্লী চিকিৎসক আব্দুল হালিম বলেন, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ঘরের বাইরে অবস্থান করে রিক্সা চালকের ছোট ছোট বাচ্চাদের ঠান্ডাজনিত সমস্যা দেখা দিয়েছে। টাকা পয়সা নেই যে ওষুধ কিনে খাওয়াবে। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা হওয়া কোন ভাবেই কাম্য নয়। টাকার জন্য ঘরে তালা মেরে লোকজনকে বাহির করে দেওয়া এক অমানবিক কাজ।

তালা মারার অভিযোগের বিষয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, সে আমার কাছ থেকে লাভের উপরে টাকা নিয়েছে। টাকা না দিয়ে সে অনেক দিন থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। বাড়ীতে গিয়ে কাউকে না পেয়ে আমি ঘরে তালা দিয়েছি। আমার টাকা পরিশোধ করলে আমি তালা খুলে দিব।

এ বিষয়ে চরকিং ইউপি চেয়ারম্যান নাঈম উদ্দিন বলেন, সুদের পাওনা টাকার জন্য কারো বসত ঘরে তালা দেওয়া আইনত অপরাধ। আমি চৌকিদার পাঠিয়ে এখনি তালা খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।

এফপি/রাজ
সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝