অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা কেবল নদী শাসনের কথা বলি। নদী পালনের কথা বলি না। আমরা সব বর্জ্য নদীতে ফেলে দিয়ে পানিকে বিষাক্ত করে তুলছি, সেই বিষ এসে আমাদের শরীরে ঢুকছে।
এ সময় পরিবেশবান্ধব চাষাবাদের মধ্য দিয়ে মৎস্য খাতকে সমৃদ্ধ করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন শান্তিতে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ।
আজ সোমবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. ইউনূস বলেন, ‘মৎস্য খাতের অবদানের জন্য আমাদেরকে প্রকৃতি ও পানির প্রতি সদয় হতে হবে। প্রকৃতি-প্রতিবেশ নষ্ট হলে মাছ উৎপাদন একসময় বন্ধ হয়ে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরিবেশবান্ধব চাষাবাদ ও তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণে এ খাতকে সমৃদ্ধ করা সম্ভব।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘মাছ আমাদের প্রিয় খাদ্য। যারা এ খাদ্য উৎপাদনে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করেন, আমরা তাদের মনে রাখি না। আমরা কেবল মাছটা সস্তা কিনা; টাটকা কিনা, সেটা নিয়ে ব্যস্ত থাকি। আজকে দিনটা তাদের মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য। তারা বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যেও বাছাই করা মাছগুলো টাটকা অবস্থায় পরিবেশন করার জন্য ব্যস্ত থাকেন।’
ড. ইউনূস আরও বলেন, পদক দেওয়ার আগে তাদের একজনের কথাই শুনলাম। শিং মাছ বিক্রি করতে এসে গুলির সামনে পড়েছেন। সারারাত বেচারা মাছের পেছনে ছিলেন, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছেন। এটা মাত্র একটি উদাহরণ।
তিনি বলেন, আমরা এত নির্দয় হচ্ছি, অন্যান্য জিনিসের মধ্যে মাছও বোধহয় আমাদের কপাল থেকে চলে যাবে। দুনিয়ার সব বর্জ্য আমরা পানিতে ফেলে দেই। আমাদের সবকিছু পানির দিকে দিয়ে দিচ্ছি। আমরা নদী শাসনের কথা বলি। কথার কথাই বলি হয়তো। নদী পালনের কথা বলি না।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের সব বর্জ্য পানিতে ছেড়ে দিচ্ছি। কিন্তু এই বর্জ্য যে বিষ হয়ে আমাদের দিকে আসছে, সেটাও আমরা গ্রাহ্য করছি না। বর্জ্য ছাড়াও যত রকমের বিষ, শরীরের যত রকমের অনিষ্টকারী জিনিস আছে, সব পানির মধ্যে ঢালছি আমরা।’
অধ্যাপক ইউনূস মৎস্য খাতের অপার সম্ভাবনা, বিশেষ করে গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণের সুযোগকে কাজে লাগানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন। অনুষ্ঠানে পুরস্কার বিজয়ীদের হাতে জাতীয় মৎস্য পদক ২০২৫ তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা।
এফপি/এমআই