Dhaka, Wednesday | 30 July 2025
         
English Edition
   
Epaper | Wednesday | 30 July 2025 | English
গভীর সংস্কার না হলে স্বৈরাচার আবার ফেরত আসবে: প্রধান উপদেষ্টা
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করছে বাঁশখালী ইকোপার্ক
সারা দেশে ১১ দিনের ‘বিশেষ সতর্কতা’ জারি
বিশ্ব বাঘ দিবস আজ
শিরোনাম:

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করছে বাঁশখালী ইকোপার্ক

প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫, ৬:১০ পিএম  (ভিজিটর : ৪৭)

বাঁশখালী ইকোপার্ক এক নয়নাভিরাম অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা পার্কের নাম। গত কয়েক মাস আগে পার্কের কচুরিপানা ও লতাপাতা নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হলেও এখন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করছে বাঁশখালীর ইকোপার্ক। চারদিকে সবুজ গাছপালা, স্বচ্ছ পানির হ্রদ ও দেশের দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতু ইকোপার্ককে করে তুলেছে প্রকৃতির স্বপ্নরাজ্য। সবুজ প্রকৃতি ছাড়াও স্বচ্ছ হ্রদ ও নানা পশু-পাখির কোলাহল দর্শনার্থী ও প্রকৃতিপ্রেমীদের মুগ্ধ করছে প্রতিনিয়ত। তাতে যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক থাকার পরও বাঁশখালী ইকোপার্কে বাড়ছে দর্শনার্থী।

জানা যায়, ২০০৩ সালে বাঁশখালীর সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত বাঁশখালী ইকোপার্কটিতে রয়েছে পিকনিক সেট, দ্বিতল রেস্ট কর্নার, দেশের দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতু, সাসপেনশন ব্রিজ, দোলনা, স্কিপার, দ্বিতল রেস্ট হাউস, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ব্যারাক ৪ ইউনিট, প্রধান ফটক, দুইটি সুবিশাল হ্রদ, ওয়াটার বোট, বন্যপ্রাণী অবলোকন টাওয়ার, কংক্রিটে নির্মিত শাবের ছাতা, রিফ্রেশমেন্ট কর্নার, ফেনোরোমিক ভিউ টাওয়ারসহ নানা বিনোদনের ক্ষেত্র। রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি এবং সরীসৃপ।

এদিকে কালের পরিক্রমায় সেই সব বিনোদন ক্ষেত্র ও স্থাপনা নষ্ট হয়ে ময়লা আবর্জনায় পরিণত হলেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে বাঁশখালী ইকোপার্কটি এখনো টিকে রয়েছে। দেশের দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতু, স্বচ্ছ হ্রদ, পশুপাখি ও সবুজ গাছপালা এখনো দর্শনার্থীদের মন জয় করে। এছাড়া প্রায়শই ইকোপার্কের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক পরিবেশে পিকনিক হয়ে থাকে। প্রতি বছর শীত বা বন্ধের দিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বহু স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী ও সামাজিক সংগঠন শিক্ষা সফর ও বনভোজনসহ নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করতে ছুটে আসেন ইকোপার্কে।  

সরেজমিনে দেখা যায়, ইকোপার্কের হ্রদের কচুরিপানা ও লতাপাতা যেন কোথায় হারিয়ে গেছে। চারদিকে শুধু সবুজ গাছপালা ও পাখির কোলাহল। স্বচ্ছ হ্রদের পানিও যেন স্বচ্ছ আয়নার মত। এছাড়া বিরল ঔষধি ও সৌন্দর্যবর্ধক গাছ ইকোপার্ককে করে তুলেছে প্রকৃতির স্বর্গরাজ্য। বাগানসহ সব স্থাপনা বেশ পরিচর্যা। দুই হ্রদ ভরেগেছে বৃষ্টির স্বচ্ছ পানিতে। সন্ধা বেলায় এসেছে শতাধিক দর্শনার্থী। পার্কের ঝুলন্ত সেতু ও অবলোকন টাওয়ার থেকে উপভোগ করা যায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। তবে পার্কের দুই হ্রদে ভালো কোন ওয়াটার বোট না থাকায় দর্শনার্থীদের মুখে দেখা গেছে হতাশা। তবে বিভিন্ন স্থাপনার বেহাল অবস্থা বেশ চোখে পড়েছে।

স্থানীয়রা জানান, পার্কটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে ওই এলাকার গুরুত্ব বেড়ে যায়। অতীতে ইকোপার্কে প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থী আসতেন। সে সময় বিভিন্ন দিবসকে ঘিরে ধারণ ক্ষমতার চার-পাঁচ গুণ দর্শনার্থীর সমাগাম দেখা যেতো পার্কে। তাদের পদচারণায় মুখরিত থাকত পুরো এলাকা। কিন্তু পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকা, বনকর্মীদের জনবল সংকট, পার্কের স্থাপনা সংস্কার না করা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার নাজুক থাকার কারণে জৌলুস হারাতে বসেছে পার্কটি। তাদের দাবি, দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও পার্কটির বিভিন্ন অবকাঠামো সংস্কার করা হলে পার্কটি তার অতীতের জৌলুশ ফিরে পাবে। তাতে বাড়বে দর্শনার্থী ও সরকার পাবে রাজস্ব।

ইকোপার্কে ঘুরতে আসা সাতকানিয়ার বাসিন্দা মো. আব্দুল কাইয়ুম বলেন, সময় পেলে ইকোপার্কে চলে আসি। এই পার্কের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সব সময় মুগ্ধ হয়। শীতকালে পার্কের হ্রদে অতিথি পাখির আগমন ঘটে সে সময়ে নিয়মিত আসা হয়। তবে পার্কের বিনোদন ক্ষেত্রের সেই সব বাহারি স্থাপনা ভেঙ্গে গেছে। দর্শনার্থীদের ধরে রাখতে হলে এসব স্থাপনা দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন।

চকরিয়ার বাসিন্দা নুরুল কবির বলেন, পাঁচ বছর আগে এসেছিলাম তখন এই পার্কটি সুন্দর ও দেখার মতো ছিল। বিনোদন ক্ষেত্রের সেই সব বাহারি স্থাপনা ছিল। এখন দেখি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছাড়া কিছুই নাই। শুধুমাত্র ঝুলন্ত ব্রীজটা কিছুটা দেখার মতো, তবে তাও দেখি জরাজীর্ণ। তবে হ্রদে দর্শনার্থীদের জন্য বিভিন্ন রকমের ওয়াটার বোট বা বিনোদনের ব্যবস্থা করতে পারলে পার্কের সৌন্দর্য আরও বাড়বে।

স্থানীয় তাওহিদুল ইসলাম বলেন, ইকোপার্ক প্রাকৃতিকভাবে সুন্দর। এটি এক এক সময়ে এক এক রকম প্রাকৃতিক রূপ ধারণ করে। তাই দর্শনার্থীদের আনাগোনা থাকে বেশি। তবে প্রতিবছরই বন বিভাগ গেইট ও গাড়ি পার্কিং ইজারা দিয়ে লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করে। কৃষি ও উপজেলা এলজিইডি বিভাগ সেচ প্রকল্পের পানি বিক্রয় করে লাখ লাখ টাকা আয় করে। অথচ বাঁশখালী ইকো পার্কের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে কোন সংস্কার নেই। সবাই যেন যে যার মতো করে লুটেপুটে খাচ্ছে।

পার্কের ইজারাদার কামরুল ইসলাম বলেন, গত রমজানের আগে ইকোপার্কের সড়কের টেন্ডার হয়েছে অথচ টিকাদার এখনো পুরোদমে কাজ শুরু করেনি। রাস্তা খুঁড়ে ফেলে রেখেছে। যার কারণে গাড়ি নিয়ে দর্শনার্থীরা আসতে পারছেন না। যারা আসতেছেন তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা হলে ইকোপার্কে দর্শনার্থী সংখ্যা কয়েকগুণ বাড়বে। এ সময় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট পার্কের বিভিন্ন স্থাপনা সংস্কারের দাবি জানান তিনি।

বাঁশখালী উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফাহাদ বিন মাহমুদ বলেন, ইকোপার্ক সড়কের কাজ চলমান রয়েছে। সড়কের কাজ দ্রুতই চলছে। শিগগিরই ইকোপার্ক সড়ক সংস্কার কাজ শেষ হবে।

বাঁশখালী ইকোপার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইসরাঈল হক বলেন, পার্ক সংস্কারে বনবিভাগের পক্ষে থেকে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। বর্তমানে প্রকল্পের মাস্টার প্ল্যানের কাজ চলছে। সেটা বাস্তবায়ন হলে পার্কটি নান্দনিক সৌন্দর্যে রূপ নিবে। এ ছাড়া ইকোপার্কে বিনিয়োগ প্রয়োজন। পার্কের নিজস্ব কোন আয় নাই। ব্যক্তিগত উদ্যোগে বেশ কয়েকবার পার্কের সংস্কার করা হয়েছে।

এফপি/রাজ
সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝