Dhaka, Thursday | 31 July 2025
         
English Edition
   
Epaper | Thursday | 31 July 2025 | English
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ এক্সারসাইজ টাইগার লাইটনিং ২০২৫ অনুষ্ঠিত
ভূমিকম্পের পর সক্রিয় আগ্নেয়গিরি, ছাইয়ে ঢেকে গেছে আকাশ
রাশিয়ায় ৮.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা
গভীর সংস্কার না হলে স্বৈরাচার আবার ফেরত আসবে: প্রধান উপদেষ্টা
শিরোনাম:

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৯ কিলোমিটারে খানাখন্দ, যানজটে নাকাল মানুষ

প্রকাশ: রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫, ১২:০৪ পিএম  (ভিজিটর : ২১)
ছবি: প্রতিনিধি

ছবি: প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে সরাইলের শাহবাজপুর পর্যন্ত মাত্র ১২ কিলোমিটার রাস্তায় ৯টি বড় খানাখন্দ রয়েছে। বর্ষার পানি জমে এসব খানাখন্দ হয়ে উঠেছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের যানজটের বড় কারণ। আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্পটিতে ভারতের অর্থছাড় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মহাসড়কটির ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে এসব খানাখন্দ তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এজন্য ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ছয় লেনের নির্মাণকাজের সুফলও কাজে আসছে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা-সিলেট-তামাবিল মহাসড়ককে ছয় লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। একই সঙ্গে আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় হয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণের কাজও শুরু হয়। ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সুবিধা বিবেচনায় আশুগঞ্জ-আখাউড়া সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের অর্থ ঋণ হিসেবে দিয়ে আসছিল দেশটি। কিন্তু গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর ভারতীয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ না করেই চলে যায়। পরে ভারত এ প্রকল্পে ঋণের অর্থছাড় বন্ধ করে দেয়। এতে ৫১ কিলোমিটার প্রকল্পের ১২ কিলোমিটারের কাজ অসম্পন্নই রয়ে যায়। পরে গত নভেম্বর থেকে সীমিত পরিসরে মহাসড়কটির সংস্কারের কাজ শুরু হলেও তা কোনো কাজেই আসছে না। উল্টো মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশের আলগা মাটি বৃষ্টিতে সরে গিয়ে বড় বড় খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। এসব খানাখন্দে সৃষ্ট যানজট পুরো ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

হাইওয়ে পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে সরাইলের শাহবাজপুর পর্যন্ত মাত্র ১২ কিলোমিটার রাস্তায় নয়টি বড় খানাখন্দ রয়েছে। যেগুলো তৈরি হয়েছে মূলত দীর্ঘদিন মহাসড়কটির কাজ না হওয়ায় আলগা মাটি সরে গিয়ে। এর মধ্যে আশুগঞ্জ গোলচত্বর পার হয়ে চিশতী ফিলিং স্টেশনের সামনে মহাসড়কে বিশাল গর্ত রয়েছে। এটির জন্য আশুগঞ্জ গোলচত্বরের অনেক আগে থেকে যানজট হচ্ছে। এর কিছুটা সামনে আশুগঞ্জ শহীদ মিনারের সামনে নির্মাণাধীন মহাসড়কের মাটি সরে গিয়ে বড় দুটি খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। যে কারণে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের এ অংশে নিয়মিত যানজট হচ্ছে। এর তিন কিলোমিটার পরে ব্যাপারী বাড়ি রোড এবং মহাসড়কের সংযোগস্থলে সৃষ্টি হয়েছে বড় খানাখন্দ। এরপর আশুগঞ্জ ডিজিটাল স্কেলের সামনের মহাসড়কে আলগা মাটি বৃষ্টির পানিতে সরে গিয়ে বড় গর্ত তৈরি করেছে। এর ঠিক পাঁচ কিলোমিটার দূরত্বে বাগাইর বাসস্ট্যান্ডের সামনে মহাসড়কে তৈরি হয়েছে বড় ধরনের খানাখন্দ। এর দুই কিলোমিটার পরই ঈদগা মাঠের সামনে মহাসড়কে একই অবস্থা। সেখানেও নিয়মিত তীব্র যানজট হচ্ছে। সরাইল শান্তিনগর বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন নির্মাণকাজ থেমে থাকা মহাসড়কের অংশেও খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। এর তিন কিলোমিটার পরে বিশ্বরোডের মোড়ে বড় দুটি খানাখন্দের কারণে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি (এইচআর অ্যান্ড মিডিয়া) মো. শামসুল আলম বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে সরাইলের শাহবাজপুর পর্যন্ত মাত্র ১২ কিলোমিটার রাস্তায় বেশকিছু বড় খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের এ অংশে যানজট হচ্ছে। যানজট নিরসনে হাইওয়ে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।’

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে নিয়মিত গাড়ি চালান বাসচালক মেহের আলী। তিনি বলেন, ‘এ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় খানাখন্দের কারণে যান চলাচল বাধাপ্রাপ্ত হয়। বিশ্বরোড মোড়ে প্রায় প্রতিদিনই তীব্র যানজট লেগে থাকে। বিশেষ করে মহাসড়কের আশুগঞ্জ থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার অংশজুড়ে আছে খানাখন্দ ও ছোট-বড় গর্ত। সে কারণে এখানে গাড়ির গতিবেগ নেমে আসে ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটারে। এ অংশে সবসময় দীর্ঘ যানজট লেগে থাকে। বিশেষ করে সামান্য বৃষ্টি হলেই এ খানাখন্দগুলোয় পানি জমে যায়। ফলে সেখানে যানজটের পাশাপাশি দুর্ঘটনাও ঘটে। এই ১২ কিলোমিটারের জন্য মহাসড়কের আড়াইশ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করতে ভোগান্তি পোহাতে হয়।’

সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের এ অংশে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রী ও চালকেরা। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই মহাসড়কের আশুগঞ্জ ও বিশ্বরোড মোড় এলাকায় রাস্তার অবস্থা নাজুক। কোথাও কোথাও গভীর গর্তের কারণে যানবাহনের চাকা আটকে যাচ্ছে, দুর্ঘটনার শঙ্কাও তৈরি হচ্ছে। এর পরও সড়কটি সংস্কার করা হচ্ছে না। মালবাহী পিকআপ ভ্যানের চালক ইমরান হোসেন বলেন, ‘রাত ১০টায় আশুগঞ্জ এলাকায় যানজটে পড়েছি। প্রায়ই এ রকম জ্যামে পড়ি। রাস্তা দ্রুত সংস্কার করতে হবে। না হলে এ সড়ক ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়বে।’ একই মন্তব্য করেন বাসযাত্রী করিম হোসেন। তিনি বলেন, ‘এত ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চলাচল করা যায় না। তার পরও করতে হয়। কারণ এখানে কোনো বিকল্প সড়ক নেই।’

অন্তর্বর্তী সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘ভারত সরকার যদি প্রকল্পটিতে বাকি অর্থায়ন না করে সেক্ষেত্রে সরকার নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পের বাকি কাজ সম্পন্ন করবে। বর্তমানে বৃষ্টির কারণে মহাসড়কটির সংস্কারকাজ করা যাচ্ছে না। বৃষ্টির মৌসুম শেষ হলে মহাসড়কটির খানাখন্দ অংশগুলোর সংস্কার শুরু হবে।’

এফপি/এমআই
সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝