Dhaka, Wednesday | 2 July 2025
         
English Edition
   
Epaper | Wednesday | 2 July 2025 | English
সক্ষমতার সীমা ছাড়িয়ে তেল পরিশোধনে ইস্টার্ন রিফাইনারির নতুন রেকর্ড
শাকিব খানের আগে ‘মেগাস্টার’ শব্দটা কানে লাগে: জাহিদ হাসান
সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার কমলো
মৃত্যুদণ্ড বাতিল হোলি আর্টিজান হামলার আসামিদের
শিরোনাম:

স্কুলছাত্রী আনজুম হত্যায় গ্রেফতারকৃতের রিমান্ড নামঞ্জুর

প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫, ১১:০২ পিএম  (ভিজিটর : ৩২)
বাঁয়ে স্কুলছাত্রী আনজুম, মাঝে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ, ডানে গ্রেপ্তারকৃত জুনেল

বাঁয়ে স্কুলছাত্রী আনজুম, মাঝে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ, ডানে গ্রেপ্তারকৃত জুনেল

মৌলভীবাজার কুলাউড়া উপজেলার বহুল আলোচিত চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্রী নাফিসা জান্নাত আনজুম হত্যা মামলার গ্রেফতারকৃত আসামি জুনেল মিয়াকে দ্রুত সময়ের মধ্যে পুলিশ গ্রেফতার করায় জনমনে স্বস্তি নেমে এসেছিল। কিন্তু আসামি জুনেল মিয়া বিজ্ঞ আদালতে খুনের স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দেননি। এমনকি পুলিশ ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে বিজ্ঞ আদালত রিমান্ড নামঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করার নির্দেশ দেন।

এমন খবর চাউর হলে নিহতের পরিবার, স্থানীয় লোকজন ও ঘাতক জুনেলের ফাঁসির দাবিতে আন্দোলন করা সাধারণ শিক্ষার্থী ও যুব সমাজের মাঝে চরম হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

১৯ জুন (বৃহস্পতিবার) সকালে মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ৫নং আমলি আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আরিফ বিল্লাহ তারেকের খাস কামরায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য পুলিশ গ্রেফতারকৃত জুনেলকে হাজির করে। এসময় আসামি জুনেলের পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে দাঁড়াননি। কিন্তু আসামি জুনেল বিজ্ঞ বিচারকের সামনে চাঞ্চল্যকর খুনের স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দেয়নি। এরআগে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শিক্ষার্থী আনজুমকে তিনি কিভাবে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে তার স্বীকারোক্তি জবানবন্দী রেকর্ড রয়েছে পুলিশের কাছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুলাউড়া থানার উপ পরিদর্শক হাবিবুর রহমান বৃহস্পতিবার বিকেলে মোবাইলে জানান, আদালতে আসামি জুনেল খুনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়নি। দিনি প্রতারণার আশ্রয় নিতে চাচ্ছেন। আমরা বিজ্ঞ আদালতে আসামির ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিলাম আদালত রিমান্ডও নামঞ্জুর করে দিয়েছেন। তবে আমরা আবার আদালতে তার রিমান্ডের জন্য আবেদন চাইবো।

উল্লেখ্য, গত ১৬ জুন দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছিল, কুলাউড়ায় শিক্ষার্থী আনজুম হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। ওই ঘটনায় প্রতিবেশী জুনেল মিয়াকে (৩৯) আটক করা হয়েছে। নিহত আনজুমকে ধর্ষণ চেষ্ঠায় ব্যর্থ হয়ে ক্ষুব্দ হয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ ছড়ায় ফেলে রাখেন ঘাতক জুনেল। আসামি জুনেলের দেখানো মতে এবং পুলিশের তল্লাশীকালে হত্যাকান্ডের আশেপাশে বিভিন্ন স্থানে ফেলে রাখা নিহত আনজুমের পরিহিত বোরকা, স্কুল ব্যাগ, বই ও একটি জুতা উদ্ধার করে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার এম কে এইজ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, গত ১২ জুন সকাল ৭টার দিকে শিক্ষার্থী আনজুম সিংগুর গ্রামে কোচিং সেন্টারে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয়। বিষয়টি নিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে কুলাউড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। নিখোঁজের দুইদিন পর ১৪ জুন বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বাড়ির পাশের ছড়ার ধারে দুর্গন্ধ পেয়ে ভিকটিমের ভাই ও মামা তার অর্ধগলিত মরদেহ খুঁজে পান। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহতের মা নাছিমা আক্তার বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ঘাতক জুনেল পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তার বাড়ির সামনের একটি রাস্তা দিয়ে প্রায়ই স্কুল ও প্রাইভেটে আসা যাওয়া করত আনজুম। সেই সুবাদে জুনেল আনজুমের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে সে আনজুমকে ধর্ষণের পরিকল্পনা করে। জুনেলের স্ত্রী শ্বশুরালয়ে চলে গেলে সেই সুযোগে কাজে লাগায় জুনেল। ঘটনার দিন আনজুম পাশের গ্রামে প্রাইভেট পড়া শেষে জুনেলের বাড়ীর সামনের রাস্তা দিয়ে ফেরার পথে সকাল অনুমান সাড়ে দশটায় আনজুমের সাথে কথা বলতে বলতে তার পিছু নেয় জুনেল। আনজুম বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলে জুনেল তাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করে। তখন আনজুম চিৎকার করলে জুনেল তার হাত দিয়ে গলায় চাপ দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে স্থানীয় মোকাম সংলগ্ন জঙ্গলের মধ্যে ঝোপে ফেলে রাখে।

নিহত আনজুম ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল খালিকের মেয়ে এবং স্থানীয় শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। আর ঘাতক জুনেল একই ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের বাসিন্দা জাহির মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় দিনমজুর। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে।

এদিকে শিক্ষার্থী আনজুম হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল সমগ্র কুলাউড়া। ঘাতক জুনেলের দ্রুত বিচারের দাবিতে প্রতিদিন একের পর এক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে যাচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থী, স্থানীয় লোকজন ও যুবসমাজ।

গত ১৫ জুন ঘাতক জুনেলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে এলাকাবাসী। ওইদিন রাতে স্থানীয় ব্রাহ্মণবাজারেও বিক্ষোভ মিছিল করে ঘাতকের ফাঁসি দাবি জানান এলাকাবাসী। পরদিন ১৬ জুন কুলাউড়া শহরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ঘাতক জুনেলের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।

এদিকে ১৮ জুন দুপুরে লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীরা ঘাতক জুনেলের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন। ১৯ জুন দুপুরে মহতোছিন আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঘাতক জুনেলের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে এবং  ভাটেরা স্টেশন বাজারে সচেতন যুব সমাজের ব্যানারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করা  হয়।

আন্দোলনকারী জানান, এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় যতক্ষণ না পর্যন্ত ঘাতক জুনেলের বিচার না হবে ততক্ষণ তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

এফপি/রাজ
সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝