ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যে তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি কার্যকরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি প্রভাব খাটানোর অনুরোধ জানিয়েছে ইরান। মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তেহরান দ্বারস্থ হয়েছে উপসাগরীয় অঞ্চলের তিন শক্তিশালী দেশ- সৌদি আরব, কাতার এবং ওমানের কাছে।
সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স একাধিক আঞ্চলিক ও ইরানি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, ইরান চায় যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগ করুক, যাতে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় তেলআভিভ। তেহরান জানায়, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে পারমাণবিক আলোচনায় তারা নমনীয় অবস্থানে যেতে প্রস্তুত।
সূত্রগুলোর দাবি, সৌদি আরব, কাতার এবং ওমানের নেতারা ইতোমধ্যে ইরান, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করেছেন। লক্ষ্য একটাই-ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনা যেন আরও বড় আকার না নেয়।
এক ইরানি কর্মকর্তা বলেন, “আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি-যুদ্ধের মাঝখানে কোনও আলোচনায় আমরা বসব না। ইসরায়েলের হামলার জবাব দেওয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অবস্থান অপরিবর্তিত থাকবে।”
আরেক উপসাগরীয় সূত্র জানায়, “এই সংঘাত আরও বিস্তৃত হয়ে পড়তে পারে-এটি এখনই থামাতে হবে। যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করেছি, যেন তারা ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগ করে।”
এদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা তচি হানেগবি এক রেডিও সাক্ষাৎকারে বলেন, “এখন যুদ্ধ থামানোর সময় নয়। কেউ যুদ্ধ শুরু করে তিনদিন পর থামাতে চায় না।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বর্তমানে কানাডায় অনুষ্ঠিত জি-৭ সম্মেলনে অবস্থান করছেন। সোমবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “ইরান এই যুদ্ধে জয়ী হচ্ছে না। কিন্তু তারা আলোচনায় বসতে আগ্রহ দেখিয়েছে। এই যুদ্ধ উভয় পক্ষের জন্যই কষ্টকর। আলোচনায় বসার এখনই সময়, দেরি না করে।”
এদিকে, মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে এই উত্তেজনার জেরে শেয়ারবাজারে অস্থিরতা এবং তেলের দামে হঠাৎ ওঠানামা দেখা দিয়েছে। ইসরায়েল ও ইরান উভয় পক্ষেই নিহত হয়েছে বহু মানুষ, ধ্বংস হয়েছে অবকাঠামো। গৃহহীন হয়ে পড়েছে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, তেহরান কৌশলগতভাবে এমন এক প্রস্তাব দিচ্ছে যা শান্তি আলোচনার দরজা খুলে দিতে পারে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে যুদ্ধবিরতির বাস্তবায়ন ও আন্তর্জাতিক কূটনীতির সফলতার ওপর।
পরিস্থিতির উন্নয়ন না হলে আরও বড় পরিসরে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
এফপি/রাজ