আগামী ৭ জুন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে জয়পুরহাট নতুন হাটে জমে উঠেছে কোরবানীর পশুর হাট। পশু আমদানী বেশি ক্রেতা বেশি থাকায় বেচাকেনা ভালো হচ্ছে।
কয়েকজন ক্রেতা জানান, দাম কম থাকায় তারা খুশি। জেলার বৃহত্তম জয়পুরহাট গো-হাটা সহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীণ হাটবাজার গুলোতে জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা মাত্র কোরবানী পশুর বেচা-কেনা শুরু হয়েছে।
এসব হাটগুলোতে দেশীয় গরুর পাশাপাশি ভারতীয় গরুর উপস্থিতিও বেশ লক্ষনীয়। একারণে কোরবানী ঈদকে উদ্দেশ্য করে লালন পালন কারী উপজেলার ক্ষুদ্র খামারীরা তাদের খামারের গরুর নায্য দাম নিয়ে দুঃচিন্তায় পড়েছেন। গো-খাদ্যের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গেলেও তারা লাভের আশায় বেশি দামে খাদ্য খাইয়ে গরু পালন করেছেন। কিন্তু বাজারে ভারতীয় গরুর ও দেশিয় গরু বৃদ্ধির কারণে এবার পশুর ভালো দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
উপজেলার চকবরকত ইউনিয়নের মল্লিকপুর গ্রামের খামারী এনামুল হক জানায়, প্রতিবছর কোরবানীর ঈদকে টার্গেট করে গরু লালন পালন করেন। এবার বিভিন্ন জাতের ৪০টি গরু পালন করেছেন। এবার বাজার খারাপ হওয়াই এখন পর্যন্ত কোন গরু বিক্রি করতে পারেননি। তার উপর বাজারে ভারতীয় গরু প্রবেশ করায় কাঙ্খিত দাম নিয়ে চিন্তায় আছেন।
তিনি জানান, গত বছর কোরবানী ঈদের জন্য ৫৫টি গরু লালন পালন করেছিলেন। কিন্তু বাজারে গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়াই এবং সে তুলনায় গরু বিক্রিতে লোকসান গুনতে হবে ভেবে এবার মাত্র ৪০টি গরু লালন পালন করেছি।
জয়পুরহাট জেলার পার্শ্ববর্তী উপজেলার বদলগাছির খামারী ছানোয়ার হোসেন বলেন, কৃষি কাজের পাশাপাশি কোরবানীর বাজারকে টার্গেট করে প্রতি বছর বিদেশী জাতের গরু লালন-পালন করি। এবার গো-খাদ্যের দাম লাগামহীন বেড়েই চলছে। এতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সে কারণে এবার ৭টি শাহীওয়াল ও অন্যান্য জাতের গরু পালন করছেন। ইতিমধ্যে তিনটি গরু বিক্রি করেছেন। তেমন লাভ না হওয়াই এবার আর কোন গরু বিক্রি করবেন না। জেলা প্রাণিসম্পদ মহিউদ্দিন জানান এ জেলার মোট ২৭টি পশুর হাট বসেছে এর মধ্যে স্থায়ী ১০টি অস্থায়ী ১৭ এ জেলায় ৩লক্ষ ১৬ হাজার ৮ শত ২৮টি পশু কোরবানি জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।
অপরদিকে এসব পশু বিক্রয়ের জন্য ১৭/১৮টি অনলাইন মাধ্যম ও সরকারিভাবে পশুরহাট পাঁচবিবি জয়পুরহাট নামে একটি সরকারী ওয়েবসাইট রয়েছে। যেখানে মূল্য সহ প্রতিদিন এসব পশুর ছবি সহ বিবরণ ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে আপলোড করা হচ্ছে।
প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা বলেন, আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে এ জেলায় বিভিন্ন খামারে পর্যাপ্ত পরিমাণে কোরবানী যোগ্য পশু রয়েছে। খামারীরা তাদের পশুর ন্যায্য মূল্য যাতে পায় সে জন্যে ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু প্রবেশে কেন্দ্রীয় ভাবে কড়া নজরদারী বাড়াতে ইতিমধ্যে বিজিবি ও সীমান্তবর্তী থানা কে অবহিত করা হয়েছে।
জয়পুরহাট-২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল নাহিদ নেওয়াজ বলেন, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে কিছু অসাধু গরু পাচারকারীচক্র সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে গরুর চালান ঢোকানোর অপতৎপরতা চালাচ্ছে। এ অপতৎপরতা রোধে বিজিবি প্রস্তুত থেকে সীমান্তে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে যাতে কোনো গরু বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে বিজিবির গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি আভিযানিক তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে।
এফপি/রাজ