নাটোরের বড়াইগ্রামের চাঞ্চল্যকর ৮ বছরের শিশু জুঁই হত্যার পুনরায় তদন্ত ও প্রকৃত আসামিদের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
বুধবার (১৪ মে) উপজেলার গারফা উত্তরপাড়া গ্রামে শিশু জুঁই এর বাড়ির সামনের রাস্তায় মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
এ সময় বক্তব্য দেন, বড়াইগ্রামের বৈসম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মাহবুব সরদার, স্থানীয় বাসিন্দা মামুন আল হাসান, বড়াইগ্রামের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নুহু ইসলাম, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন পাবনার নেতা কিবরিয়া হোসেন, স্থানীয় বাসিন্দা জিয়াউর রহমান মাস্টার, পল্লী চিকিৎসক হাসান আলী, নিহত শিশু জুঁই এর মা মমিনা খাতুন, দাদী জহুরা খাতুন সহ অনেকে।
বক্তারা বলেন, শিশু জুঁই হত্যা মামলাটি ভিন্ন খাতে নেওয়ার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। প্রকৃত আসামিদের আড়াল করা হচ্ছে। পুলিশের হাতে গ্রেফতারকৃত পাঁচজনের মধ্যে সিয়াম ব্যতীত বাকি চারজন এই হত্যা মামলায় জড়িত নয় বলে মনে করছেন এলাকাবাসী ও শিশু জুঁই এর স্বজনরা। সিয়াম কে ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রকৃত অপরাধীদের নাম বেরিয়ে আসবে। তাই শিশু জুঁই হত্যা মামলাটি পুনরায় তদন্ত করা ও প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ প্রশাসনের কাছে দাবি জানান স্থানীয় বাসিন্দা ও জুঁই এর পরিবার।
নিখোঁজের একদিন পর গত ১৫ এপ্রিল সকালে পার্শ্ববর্তী চাটমোহর উপজেলার রামপুর বিলে একটি ভূট্টা ক্ষেতের মধ্যে ৮ বছরের শিশু জুঁই খাতুনের বিবস্ত্র লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তার মুখে ছিল পোড়া ক্ষতবিক্ষত চিহ্ন।
নিহত শিশু জুঁই বড়াইগ্রাম উপজেলার গাড়ফা উত্তরপাড়া গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী জাহিদুল ইসলামের মেয়ে ও গাড়ফা আজেদা নূরানী কিন্ডার গার্ডেন মাদ্রাসার শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। এ ঘটনায় নিহত শিশু জুঁই এর মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে চাটমোহর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এরপর গত ১৯ এপ্রিল জুঁই হত্যা রহস্য উদঘাটন ও হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় তারা।
পুলিশের কাছে তারা জানায়, ১৪ এপ্রিল, পহেলা বৈশাখের দিন গাঁজা সেবন করা আর খারাপ মেয়ে নিয়ে এসে আনন্দ ফূর্তি করার পরিকল্পনা ছিল তাদের। কিন্তু টাকা জোগাড় করতে না পারায় একটি আম বাগানে বসে গাঁজা সেবন করে তারা। এ সময় সেখানে আম কুড়াতে গেলে সাত বছর বয়সী শিশু জুঁই। তাকে দেখে তাদের মনে পাশবিকতা জেগে ওঠে। শিশুটিকে ধরে নিয়ে যায় পাশের কলা বাগানে। এরপর সবাই মিলে পালাক্রমে ধর্ষণের পর শিশুটিকে তার পড়নের প্যান্ট দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। শুধু তাই নয়। লাশটি যাতে পুলিশ বা অন্য কেউ চিনতে না পারে সেজন্য অ্যাসিড জাতীয় তরল পদার্থ দিয়ে শিশুর মুখ পুড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, বড়াইগ্রাম উপজেলার গড়ফা গ্রামের সুলতান হোসেনের ছেলে সোহেল রানা (২৫), আয়নাল হকের ছেলে শেখ সাদি (১৬), দুলাল হোসেনের ছেলে শাকিব (১৬), দিয়ার গাড়ফা গরমাটি গ্রামের শাহীন আলমের ছেলে সিয়াম (১৩) ও চাটমোহর উপজেলার রামপুর গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে আবদুল্লাহ (১৬)।
এফপি/রাজ