ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার বামনকান্দা জংশন এলাকায় শুক্রবার (৯ মে) রাত ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকা থেকে খুলনাগামী জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন ও একটি লাগেজ ভ্যান লাইনচ্যুত হয়। পয়েন্টম্যানের ভুল সিগন্যালের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে, যার ফলে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-খুলনা, ঢাকা-বেনাপোল ও ঢাকা-রাজবাড়ী রুটে ট্রেন চলাচল প্রায় ১৩ ঘণ্টা বন্ধ থাকে ।
ভাঙ্গা রেলওয়ে জংশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার সুমন বাড়ৈ জানান, ট্রেনটি ভাঙ্গা স্টেশন থেকে ছাড়ার কিছুক্ষণ পর ইঞ্জিন ও লাগেজ ভ্যান এক লাইন থেকে অন্য লাইনে চলে যায়, যার ফলে লাইনচ্যুতি ঘটে । দুর্ঘটনার সময় ট্রেনে প্রায় ৬০০-৭০০ যাত্রী ছিলেন, যারা তাৎক্ষণিকভাবে বিভিন্ন বিকল্প পরিবহনে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেন ।
দুর্ঘটনার পর ঈশ্বরদী ও খুলনা থেকে দুটি রিলিফ ট্রেন ও ক্রেনসহ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী উদ্ধারকাজে অংশ নেন । পাকশি বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা হাচিনা খাতুন জানান, পয়েন্টম্যান নজরুল ইসলাম কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই সিগন্যাল পরিবর্তন করেছিলেন, যা দুর্ঘটনার মূল কারণ। তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে ।
শনিবার (১০ মে) সকাল ১০টা ২০ মিনিটে লাইন মেরামত শেষে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয় । জাহানাবাদ এক্সপ্রেস অন্য একটি ইঞ্জিনের সাহায্যে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তবে দুর্ঘটনার প্রভাবে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও নকশিকাঁথা ট্রেনের সময়সূচিতে বিলম্ব ঘটে ।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে সিগন্যাল ব্যবস্থার উন্নতি ও কর্মীদের প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেওয়া হবে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে ।
এই দুর্ঘটনা রেলওয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা তুলে ধরেছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা স্মরণ করিয়ে দেয়।
এফপি/রাজ