শরীয়তপুর সদর উপজেলার বিতর্কিত উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. তাজুল ইসলামের বদলিকে কেন্দ্র করে দোয়া, মিষ্টি বিতরণ ও স্বস্তির র্যালি করেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাংশ শিক্ষক।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস চত্বরে শিক্ষকরা দোয়া মাহফিল ও মিষ্টি বিতরণের আয়োজন করেন। পরে তারা আনন্দ র্যালি বের করে এই পরিবর্তনকে ‘স্বস্তির বার্তা’ হিসেবে স্বাগত জানান।
শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, তাজুল ইসলাম ২০২০ সালে শরীয়তপুর সদর উপজেলায় যোগদানের পর থেকেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সরকারি বরাদ্দ থেকে ৭ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত অবৈধ ঘুষ গ্রহণ, শিক্ষক নির্যাতন, বদলি বাণিজ্য, সরকারি অনুদান বিতরণে অনিয়মসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। এসব কারণে শিক্ষক সমাজের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বাড়তে থাকে। তার বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে একাধিকবার সংবাদও প্রকাশিত হয়।
দাসার্ত্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোবিন্দ বলেন, “বিভিন্ন সরকারি বরাদ্দে কমিশন গ্রহণ, শিক্ষকদের অপমান করা, বিভাজন সৃষ্টি এবং নানা অনিয়মের কারণে শিক্ষক সমাজ অনেকদিন ধরেই ক্ষুব্ধ ছিল।”
৮৯ নং চাদসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহিনুর আলম বলেন,“৭–১০% কমিশন নেওয়া, শিক্ষক নির্যাতন এবং দুর্নীতির অভিযোগ বহুদিনের। তার বদলির খবরে আমরা স্বস্তি পেয়েছি। তবে শুধু বদলি নয়, দুর্নীতির সঠিক তদন্ত ও শাস্তি প্রয়োজন।”
হোগলা মাকশাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. হায়দার হোসেন বলেন, গত মাসে এক মিটিংয়ে মোবাইল ফোন জমা নিয়ে তিনি ৭–১০% ঘুষ দাবি করেন। যে টাকা দেয় তাকে ভালো শিক্ষক বলা হয়, আর যারা দেয় না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের এক প্রজ্ঞাপনে তাজুল ইসলামকে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় বদলি করা হয়। তবে তিনি সেখানে যোগ না দিয়ে পরে তদবিরের মাধ্যমে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় নতুন বদলি নিশ্চিত করেন।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন।
শরীয়তপুর জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, আজকের ঘটনাটি মীমাংসার জন্য আমি সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসে এসেছি। অভিযোগগুলো খুবই দুঃখজনক। সবাইকে নিয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
এফপি/জেএস