চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে লিজ দেওয়ার উদ্যোগের প্রতিবাদে এবং লালদিয়া চর ও পানগাঁও টার্মিনালের লিজ চুক্তি বাতিলের দাবিতে শ্রমিক–কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) বুধবার তিন ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত স্কপের নেতাকর্মীরা নগরের তিনটি প্রবেশমুখ—বড়পুল মোড়, সিম্যান্স হোস্টেল গেট ও বন্দর টোল প্লাজা মোড়ে অবস্থান নিয়ে বন্দরমুখী যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেন।
পুলিশি নিষেধাজ্ঞার কারণে স্কপের নেতাকর্মীরা সরাসরি বন্দর এলাকায় প্রবেশ করতে না পারলেও নির্ধারিত তিনটি স্থানে অবস্থান নিয়ে অবরোধ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এতে কভার্ডভ্যান, ট্রাক ও ট্রেইলারসহ পণ্যবাহী সব ধরনের যানবাহন আটকে পড়ে এবং বন্দর এলাকার স্বাভাবিক কার্যক্রমে ধীরগতি লক্ষ্য করা যায়। অবরোধ কর্মসূচিতে সমর্থন জানায় বাম গণতান্ত্রিক জোট ও সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। স্কপের ব্যানারে লেখা ছিল—“এনসিটি ডিপি ওয়ার্ল্ডকে ইজারা দেওয়ার পাঁয়তারা এবং লালদিয়া চর ও পানগাঁও টার্মিনালের ইজারা বাতিলের দাবিতে বন্দর অবরোধ।”
বড়পুল মোড়ে আয়োজিত সমাবেশে স্কপের আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক শেখ নুরুল্লাহ বাহার বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের লাইফলাইন এবং এনসিটি একটি লাভজনক স্থাপনা। তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার ধারাবাহিকভাবে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে বন্দর স্থাপনা লিজ দেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে। তিনি আরও ঘোষণা করেন, ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে ৫ ডিসেম্বর পুরাতন রেলস্টেশন থেকে মশাল মিছিল বের করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
বাসদ চট্টগ্রাম জেলা ইনচার্জ আল কাদেরী জয় বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের মালিকানা দেশের মানুষের এবং জনগণকে অজ্ঞাত রেখে রাষ্ট্রীয় চুক্তি করা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। তার দাবি, ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে মার্কিন নৌবাহিনীর সামরিক চুক্তি থাকায় এমন প্রতিষ্ঠানের কাছে এনসিটি লিজ দেওয়া জাতীয় সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার শামিল।
স্কপ নেতা ও ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি তপন দত্ত জানান, শান্তিপূর্ণ উপায়ে আন্দোলন চালানো হচ্ছে এবং বন্দর কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত না বদলানো পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।
গত শনিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে স্কপের বিভাগীয় সম্মেলন থেকে এই অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
এফপি/অ