চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। স্থানীয় সায়েন্স অ্যান্ড রোবটিকস ক্লাব অর্জন করেছে এমন একটি সাফল্য, যা শুধু জেলার নয়, বরং পুরো দেশের জন্যই গর্বের। তরুণ উদ্ভাভোক জাতীয় পর্যায়ে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে জায়গা করে নিয়েছে জিহাদ নেতৃত্বাধীন এই দল।
বাংলাদেশ ইয়াং সায়েন্টিস্টস অ্যান্ড ইনোভেটরস সোসাইটি (বাইসিস) আয়োজন করে World Youth STEM Invention Innovation-National Round। রাজধানীর তেজগাঁওয়ের সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে ১৯ নভেম্বর বুধবার অনুষ্ঠিত এ প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শতাধিক দল অংশ নেয়। কিন্তু সবার নজর কাড়ে দামুড়হুদার দর্শনা থেকে অংশ নেওয়া চুয়াডাঙ্গা সায়েন্স অ্যান্ড রোবটিকস ক্লাব।
সারা দেশ থেকে মাত্র ১০টি দল আন্তর্জাতিক পর্বে (থাইল্যান্ড-২০২৬) যাওয়ার সুযোগ পায়, আর সেই নির্বাচিত দলগুলোর তালিকায় জায়গা করে নেয় চুয়াডাঙ্গা সায়েন্স অ্যান্ড রোবটিকস ক্লাব। জাতীয় রাউন্ডে তারা অর্জন করে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মাননা:
১) গোল্ড মেডেল (Robotics & Drone Category)
২) Best Innovative Idea Award
৩) Best Club Partner Recognition
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইজিলিশ ইন্টারন্যাশনাল (সিঙ্গাপুর)-এর পরিচালক সোলাইমার্ন লেখেম এবং সমন্বয়ক থিওয়ারা চিতজুই। আরও উপস্থিত ছিলেন টেকনোলজি মিডিয়া গিল্ড বাংলাদেশ,এর প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ কাউসার উদ্দিন, ব্যাপনের সিইও ডা. রিফাত মাহবুব এবং নাবাটেক ওয়ার্ল্ডের প্রতিষ্ঠাতা নাদিমুল হক জুলাস। পুরো আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন বাইসিসের প্রেসিডেন্ট মোসাদ্দেক হোসেন।
দর্শনা পরানপুর গ্রামের জয়নাল আবেদিন ও নাসরিন খাতুন দম্পতির একমাত্র ছেলে জাহিদ হাসান জিহাদ নিজ প্রতিভায় এবং দলকে নেতৃত্ব দিয়ে এক নতুন পরিচিতির জন্ম দিয়েছেন। জাতীয় মঞ্চে রোবটিকসে তার পারদর্শিতা ও দলের প্রতি তার নিবেদন ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।
দলে জিহাদের সঙ্গে ছিলেন আরও দুই মেধাবী সদস্য, ওয়ারিদ আব্দুল্লাহ ও নুজহাত ফাইজা। তাদের সার্বিক নির্দেশনা দিয়েছেন মেন্টর সাদেকুল ইসলাম।
আগামী ২৮ জানুয়ারি ২০২৬, থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক পর্বে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করবে এই সফল দলটি। সেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তরুণ উদ্ভাবকদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তারা। চুয়াডাঙ্গার মানুষের জন্য এটি নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক অর্জন।
জিহাদ অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, এই অর্জন দর্শনা এবং চুয়াডাঙ্গার প্রত্যেক মানুষের। আমাদের কঠোর পরিশ্রমের ফল আজ আমরা গোল্ড মেডেল পেয়েছি। বিশ্বমঞ্চে দেশের পতাকা বহন করতে পারা সবারই স্বপ্ন,আমরা সেই সুযোগ পেয়েছি। চাই আমাদের সাফল্য দেখে দেশের তরুণরা আরও বিজ্ঞানচর্চায় আগ্রহী হোক।
তার মা-বাবা বলেন,শৈশব থেকেই জিহাদ প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহী। আজ তার পরিশ্রম মূল্য পেয়েছে। আমরা চাই সে দেশকে আরও বড় করে তুলে ধরুক। সবার দোয়া ও ভালোবাসা যেন থাকে তার সঙ্গে।
এফপি/অ