জয়পুরহাটে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাল্যবিবাহের প্রবণতা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। সরকারি উপবৃত্তি নেওয়া অনেক শিক্ষার্থী বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখছেন। শিক্ষকরা বিষয়টি জানলেও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। ফলে শিক্ষাবিদ ও অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।
জয়পুরহাট সদর উপজেলার ধারকী উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাস চললেও অনেক শিক্ষার্থীর হাতে বইয়ের পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে শাঁখা, সিঁদুর ও হাতে মেহেদীর রং। কিছু ছাত্রী পড়াশোনার পাশাপাশি সংসারও সামলাচ্ছেন। কেবল এই বিদ্যালয় নয়, পুরো জেলার প্রায় সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়েই একই চিত্র লক্ষ্য করা যায়। অনেক শিক্ষার্থী গোপনে সরকারি উপবৃত্তি নিচ্ছেন। এ বিষয়ে সভা সেমিনার করলেও বন্ধ হচ্ছে না, বরং দিন দিন বেড়েই চলেছে বাল্য বিবাহ। অল্প বয়সে বিয়েতে উৎকন্ঠিত শিক্ষার্থীরা।
গ্রামে মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা বেশী। এতে আমাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হচ্ছে।
এমন পরিবারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দারিদ্র ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে মেয়েদের বিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে অনেকের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
শিক্ষকরা জানান, অনেক সময় আমরা জানি কোন ছাত্রী বিয়ে হয়ে গেছে। কিন্তু প্রমাণ ছাড়া প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া কঠিন।
জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, বিবাহ রেজিস্ট্রার, মাওলানা ও অভিভাবকদের সচেতনতার অভাব এবং সামাজিক চাপই এই প্রবণতা বাড়াচ্ছে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে তা আরও ভয়াবহ হবে।
সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার তোফাজ্জল হোসেন জানিয়েছেন, বাল্যবিবাহ ঠেকাতে শিক্ষক, অভিভাবক ও প্রশাসনের সমন্বয় জরুরি। উপবৃত্তি প্রকৃত শিক্ষার্থীরাই পায় তা নিশ্চিত করতে আমরা নজরদারি বাড়াচ্ছি।
জেলা শিক্ষা অফিসার রুহুল আমিন বলেন, শিক্ষার আলো জ্বালাতে হলে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ এখন সময়ের দাবি। আর বিবাহিত শিক্ষার্থীকে সরকারি উপবৃত্তির টাকা প্রদানের প্রমান মিললেই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শুধু শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ে আনা নয়, তাদের শিক্ষাজীবন সুরক্ষিত রাখতেও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। আইন থাকলেও মাঠ পর্যায়ে প্রয়োগ দুর্বল। এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষার পাশাপাশি সমাজও দীর্ঘমেয়াদী সংকটে পড়বে।
এফপি/অ