দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিকে কেন্দ্র করে সারাদেশের প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা তোলার অভিযোগ উঠেছে। “আন্দোলনের খরচ” দেখিয়ে শিক্ষক প্রতি ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিভিন্ন জেলার শিক্ষকরা। এতে মাঠপর্যায়ের শিক্ষক সমাজ চরম ক্ষোভ ও ভয়ের মধ্যে রয়েছেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ৬৫,৫৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন ৩,৮০,৪৫১ জন শিক্ষক। শিক্ষক প্রতি ৫০০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করলে মোট অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১৯ কোটি ২ লাখ টাকা— যা এক বিশাল অঙ্ক।
বিভিন্ন জেলার শিক্ষকরা জানিয়েছেন, প্রায় দুই–তিন মাস পরপরই “আন্দোলনের খরচ” বা “সভা-সমাবেশের জন্য ব্যয়” দেখিয়ে টাকা তোলা হয়। কিন্তু এই বিপুল অর্থ কোথায় ব্যয় হচ্ছে, তার কোনো হিসাব বা স্বচ্ছতা কেউ পাচ্ছেন না।
শ্রীপুর উপজেলার এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমরা আন্দোলনের পক্ষে, কিন্তু এখন এটা আন্দোলন না, রীতিমতো চাঁদাবাজিতে পরিণত হয়েছে। টাকা না দিলে তালিকা থেকে নাম কেটে দেওয়া হয়, অপমান করা হয়।”
শিক্ষক সমাজের অভিযোগ, আন্দোলনের নামে এই চাঁদাবাজি সারা দেশে এক নীরব আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী, রংপুরসহ প্রায় সব বিভাগ থেকেই একই অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আগামী শনিবার আবারও দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে। সেই আন্দোলনের খরচ হিসেবেই শিক্ষক প্রতি ৫০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
শিক্ষকরা বলছেন, “দাবি ন্যায্য, কিন্তু পদ্ধতি অনৈতিক। টাকার হিসাব না থাকলে আন্দোলনের প্রতি বিশ্বাস হারাবে সবাই।”
তাঁরা আন্দোলনের নামে তোলা অর্থের স্বচ্ছতা নিশ্চিত ও চাঁদাবাজির তদন্ত দাবি করেছেন।
এফপি/এমআই