সুন্দরবনে আগত পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বন সংলগ্ন খাল পাড়ে গোলপাতা আর কাঠ—বাঁশ দিয়ে তৈরী নান্দনিক ১৩ টি ফরেস্ট রিসোর্ট । সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনে এসে এক সময় ভোগান্তিতে পড়তে হতো পর্যটকদের। এ রিসোর্ট গুলো দুর করবে পর্যটকদের ভোগান্তী আর তৈরী হচ্ছে কর্মসংস্থান। এ রিসোর্ট গুলো বিকশিত করবে বাংলাদেশের পর্যটনখাত।
সুন্দরবনের ঢাংমারী খাল দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলেই বনের বিপরীত পাশে খাল পাড়ে যে কারো চোখে পড়বে কাঠ,বাঁশ আর গোলপাতার ওই রিসোর্ট গুলো। বাহিরে কাঠ বাঁশ আর গোলপাতা দেখা গেলেও ছোট ছোট ঘরগুলোর ভিতরে যেন বিলাসিতার শেষ নাই। ভেতরে প্রবেশ করলেই যে কারো মনে হবে কোন এক থ্রীস্টার হোটেল। তাই যান্ত্রিক জীবনের জটিলতা এড়িয়ে নিরব নিস্তব্ধ পরিবেশে আভিজাত্যের সাথে এ রিসোর্ট গুলোতে রাত্রি যাপন করতে সুন্দরবনে বাড়ছে পর্যটকের আগমন। এসব রিসোর্টের চমৎকার লাউঞ্জ আর ওপেন ডাইনিং প্লেসে বসে সেরে নিতে পারে ন্যাচারাল মেডিটেশন। প্রত্যেকটি রুমের নান্দনিক পরিবেশ ও আলাদা আলাদা বারান্দা শুয়ে বসে দেখতে পারাযায় সুন্দরবনের নদীর জোয়ার ভাটার অদ্ভুত সৌন্দয্যর্। সুন্দরবনে আসা পর্যটকদের কাছে আকাশ চুম্বি জনপ্রিয় এই ফরেষ্ট ইকো রিসোর্ট গুলো।
ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকার বাসিন্ধা রফিকুল ইসলামের সাথে কথা হয় সুন্দরী নাম রিসোর্টে। তিনিও জানান, তারা ১০ বন্ধু মিলে সুন্দরবনে গুরতে এসেছেন। রাত্রীযাপনের জন্য তাদের পছন্দ নদীর পারের গোলপাতার তৈরি ওই রিসোর্ট। তাই সুন্দরী রিসোর্টে একটি বড় কক্ষ ভাড়া করেছেন। তিন দিন থাকবেন। সেখানে থেকে সুন্দরবনে ঘুড়ে বেড়াবেন।
ঢাকার উওরা এলাকার বাসিন্ধা কলেজ ছাত্রী স্নিগ্ধা জানান, তিনি তার বাবা মায়ের সাথে সুন্দরবন গুরতে এসেছেন। আগে থেকে বন বিবি নামক একটি রিসোর্টে থাকার জন্য বুকিং দিয়ে রেখেছেন। তাই তাদের রাত্রীযাপনে কোন সমস্যা নাই। তিনও জানান, রিসোর্টে বসে নদীর জোয়ার ভাটা আর বনের বন্যপ্রাণী দেখাযায়। তাই খুবই মজার ব্যাপার।
সুন্দরী রিসোর্ট এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেজোয়ানুল হক মিঠু জানান, ঢাংমারী খালের ঘাগরামারী ফরেষ্ট ক্যাম্পের অপর প্রান্তে এক সময় নদীর পাশে পরিত্যাক্ত ভূমিগুলোতে তৈরী হয়েছে ১৩ টি ফরেষ্ট রিসোর্ট। এসব রিসোর্টগুলো দেশের পর্যটকখাত সমৃদ্ধ করবে, এখানে হচ্ছে স্থানীয়দের কর্মস্থান। রিসোর্টে রাত্রীযাপনের সুযোগ থাকায় দেশী—বিদেশী পর্যটকদের আগমনে বাড়ছে সুন্দরবনে। এতে সরকার বা বন বিভাগের রাজ্বস্ব আয় বৃদ্ধি পেয়েছে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের ঘাগরামারী ফরেষ্ট ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ জানান, বন সংলগ্ন অনউন্নোত এলাকায় রিসোর্ট তৈরী হওয়ায় এখানে কিছু মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে বন কেন্দ্রীক অবৈধ কর্মকান্ড কমে আসবে।
দেশের পর্যটনখাত বিকশিত করতে নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। সরকারের ওইসব উদ্যোগ কার্যকর করতে ব্যাক্তি উদ্যোগে পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলাগেলে দেশী বিদেশী পর্যটক আকৃষ্ট হবে সুন্দরবনকে গিরে।
এফপি/অ