| শিরোনাম: |

ডিএমপির সাবেক কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়ার ব্যবসায়িক অংশীদার হিসেবে পরিচিত ঝিনাইদহ জেলার সদর উপজেলার বাসিন্দা আব্দুল মজিদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, দৃশ্যমান কোনো বৈধ ব্যবসা না থাকা সত্ত্বেও তিনি বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন এবং দেশে-বিদেশে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।
আবেদনকারীর তথ্য অনুযায়ী, আব্দুল মজিদের বাবার নাম ইন্তাজ আলী। স্থায়ী ঠিকানা ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কলাবাগান এলাকায়। বর্তমানে তিনি রাজধানী ঢাকার উত্তরা ও আশপাশে একাধিক ফ্ল্যাট, দোকান ও প্লটের মালিক বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগে বলা হয়, তিনি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) উত্তরা মার্কেটে অন্তত পাঁচটি দোকান ক্রয় করেছেন, প্রতিটির দাম প্রায় ৫০ লাখ টাকা। এছাড়া তিনি ঢাকায় “স্পেশালাইজড হাসপাতাল”-এর অংশীদার, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় পাঁচ কোটি টাকা।
সূত্র জানায়, মজিদ রয়েল ক্লাব, বোট ক্লাবসহ বিভিন্ন অভিজাত ক্লাবের সদস্যপদ নিয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন। সদস্য হতে তিনি ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ফি পরিশোধ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন বার ও গুদাম থেকে মদ সরবরাহের ব্যবসার সঙ্গেও তাঁর নাম জড়িত রয়েছে।
তদন্ত সূত্রের দাবি, সাবেক কমিশনার আসাদুজ্জামানের প্রভাব ব্যবহার করে তিনি উত্তরা এলাকায় ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ২০টির বেশি ফ্ল্যাট দখলে নিয়েছেন, যার কোনোটি তাঁর আয়কর নথিতে উল্লেখ নেই।
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, আব্দুল মজিদ বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়ে তুলেছেন এবং মালয়েশিয়া ও দুবাইতে হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাচার করেছেন। ঝিনাইদহ ও ঢাকায় তাঁর নামে এবং পরিবারের সদস্যদের নামে বিপুল পরিমাণ জমি ও বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর ও আরাপপুর এলাকায় তাঁর নামে কয়েক বিঘা জমি ও একটি বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে। উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরে ২.৫ কাঠা জমি, পূর্বাচলে ৪.৫ কাঠা প্লট এবং শ্যামলী ও খিলক্ষেতে একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া আবেদনকারীর দাবি, মজিদের নামের দুটি পৃথক টিআইএন (কর শনাক্তকরণ) সার্টিফিকেট পাওয়া গেছে—একটি ঝিনাইদহের ঠিকানায়, অপরটি পাবনার ঠিকানায়। একই ব্যক্তির নামে দুটি টিআইএন সার্টিফিকেট কিভাবে ইস্যু হলো, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
সূত্র আরও জানায়, ডিএফআইএ কর্তৃপক্ষ তাঁর পাসপোর্ট একসময় স্থগিত করলেও পরবর্তীতে প্রভাব খাটিয়ে তা পুনরায় সচল করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, সাবেক কমিশনার আসাদুজ্জামানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সুবাদে তিনি আওয়ামী সরকারের সময় বিভিন্ন বরাদ্দ, প্রকল্প ও জমি লেনদেনে সুবিধা পেয়েছেন। বিশেষ করে পূর্বাচল ২১ নম্বর সেক্টরে সচিব ফজলুর রহমানের কাছ থেকে একটি ১০ কাঠার প্লট ক্রয় করেন, যেখানে সরকারি বিধি অনুযায়ী একজন কর্মকর্তা একটির বেশি প্লট নিতে পারেন না।
এফপি/অ