দেশের পাশাপাশি পশ্চিম বাংলার সিনেমায় এখন চঞ্চল চৌধুরী এক অনিবার্য নাম। টলিপাড়ার একাধিক সিনেমায় তাঁর অভিনয় বাংলা দর্শকের মনে এক অত্যন্ত দৃঢ় ও বিশ্বস্ত স্থান করে নিয়েছে। তিনি যে কোনো চরিত্রকে জীবন্ত করে তোলার দক্ষতার জন্য পরিচিত।
অন্যদিকে, তাসনিয়া ফারিণ স্বল্প সময়ের মধ্যে নিজেকে একজন শক্তিশালী ও মেধাবী অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। পশ্চিম বাংলার খ্যাতনামা নির্মাতা অতনু ঘোষ পরিচালিত ‘আরও এক পৃথিবী’ সিনেমায় তাঁর অভিনয় দর্শক ও সমালোচকদের সমানভাবে মুগ্ধ করেছিল।
সম্প্রতি কলকাতায় ‘স্বার্থপর’ ছবির বিশেষ স্ক্রিনিংকে কেন্দ্র করে তাদের যৌথ উপস্থিতি এবং পরবর্তী আড্ডা-গল্প শোরগোল ফেলে দিয়েছে ঢাকা ও কলকাতায়। শুধু প্রেক্ষাগৃহে নয়; তাদের একসঙ্গে দেখা গেছে কলকাতার ব্যস্ত রাস্তায়, স্টুডিওপাড়ার গলিতে, কফিশপে এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ লোকেশনে। এই ‘হঠাৎ’ এবং ‘অবিরাম’ যৌথ উপস্থিতি চলচ্চিত্রপ্রেমী, সিনেমা বিশ্লেষক, সামাজিক মাধ্যমে প্রভাব বিস্তারকারীদের মধ্যে এক কৌতূহলের সৃষ্টি করেছে। প্রশ্ন একটিই, এটি কি শুধুই কাকতালীয়, নাকি আসন্ন কোনো বড় প্রজেক্টের মাস্টারপ্ল্যান? চঞ্চল-ফারিণের এই হঠাৎ কলকাতায় আবির্ভাবের পেছনের গল্পটি বেশ চমকপ্রদ। কোয়েল মল্লিকের আমন্ত্রণে ‘স্বার্থপর’ ছবির বিশেষ স্ক্রিনিংয়ে হাজির হন দুই তারকাই।
তবে সেখানেই গল্প শেষ নয়; এ বিষয়ে চঞ্চল চৌধুরী বললেন, ‘আসলে দুজনেই জানতাম না যে আমরা একই সময়ে কলকাতায় আছি! আমি এখানে এসেছি আমার নিজস্ব সিনেমার কাজের পাশাপাশি কিছু গুরুত্বপূর্ণ মিটিং করতে। ঠিক সেই মিটিংয়ের সূত্র ধরে অপ্রত্যাশিতভাবে দেখা হলো ফারিণের সঙ্গে। মজার ব্যাপার হলো, ফারিণও এখানে এসেছিলেন পরিচালক অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরীর সঙ্গে একটি প্রজেক্ট নিয়ে আলোচনা করতে। দুজনের কাজের সময় মিলে যাওয়ায় ঘটনাচক্রে দেখা হয়ে গেল।
বিষয়টি বেশ রোমাঞ্চকর এবং সিনেম্যাটিকই বলতে হবে!’ তাদের এই রহস্যময় ও কাকতালীয় সাক্ষাৎ দর্শকদের মনে একটিই বড় প্রশ্ন জাগিয়েছে– এই দুই বহুমাত্রিক অভিনয়শিল্পীকে কি খুব শিগগির একই সিনেমায় দেখা যাবে? এ প্রশ্নের উত্তরে উভয়েই কিছুটা রহস্য আর কিছুটা আশার বাণী শোনালেন। তারা জানালেন, এটি নিয়ে কথা হচ্ছে, এটি সত্যি। কিন্তু এখনই কিছু নিশ্চিত করে বলার সময় আসেনি। তারা দুজনেই একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। আশা করা যায়, খুব শিগগির দর্শকের জন্য কিছু সুখবর নিয়ে আসতে পারবেন। চঞ্চল আরও গোপনীয়তার আবরণ খুলে দিলেন এই বলে, ‘সেদিন আমরা পরিচালক অনিরুদ্ধদার সঙ্গে ব্রেকফাস্ট থেকে লাঞ্চ– দুই বেলার খাবারই একসঙ্গে করেছি। সঙ্গে চলেছে সিনেমা, গল্প এবং নানা সৃজনশীল আলোচনা।’ যদিও তারা সরাসরি কোনো প্রজেক্টের নাম করলেন না, তবুও এই একসঙ্গে সময় কাটানো, একই পরিচালকের সঙ্গে একই সময়ে মিটিং– সবকিছুই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে পর্দার পেছনের আলোচনা পর্দার সামনেও প্রকাশ পেতে চলেছে খুব শিগগির।
পরিচালক অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী টলিউডে একটি বিশ্বস্ত নাম। তিনি এর আগে জয়া আহসানকে নিয়ে ‘ডিয়ার মা’র মতো ছবি নির্মাণ করেছিলেন, যা দর্শকের মনে বহু বছর ধরে গেঁথে রয়েছে। তাঁর মতো একজন পরিচালকের ছায়ায় যদি চঞ্চল ও ফারিণের মতো অভিনয়শিল্পীকে একসঙ্গে পাওয়া যায়, তবে তা হবে অসাধারণ।
সামাজিক মাধ্যমে ইতোমধ্যে এই সম্ভাব্য নতুন জুটিকে ঘিরে বেশ আলোচনা হচ্ছে। অনুরাগীরা তাদের আড্ডার ছবি ও ভিডিও শেয়ার করে নিজেদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন।
এফপি/অ