বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মফিজুর রহমান আশিক বলেন, বঙ্গোপসাগর চাঞ্চল্যকর বাঁশখালীর ৩১ জেলে হত্যার বিচার নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে নিহতদের পরিবারগুলোতে। হত্যাকাণ্ডের ১২ বছর পরও ৩১ জেলে হত্যায় জড়িতরা বিচারের আওতায় আসেনি। বাঁশখালীবাসীর দাবি, বঙ্গোপসাগরে বাঁশখালীর ৩১ জেলে হত্যা ও বাঁশখালীর গণ্ডামারায় এস আলম কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে শ্রমিক হত্যায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধায় বাঁশখালী উপজেলার শেখেরখীল মৌলভীবাজার এলাকায় তারেক রহমানের ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ ও ধানের শীষের প্রচারণাকালে অনুষ্ঠিত পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় তিনি আরও বলেন, 'চাঞ্চল্যকর বাঁশখালীর ৩১ জেলে হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল হোতারা বিদেশে পালিয়ে গেছেন, আবার অনেকে দেশে আরাম আয়েশে আছেন। বাঁশখালীতে এ পর্যন্ত যতগুলো হত্যাকাণ্ড ঘটেছে আমরা প্রত্যেকটা হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করছি। এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপরাধীরা যতই শক্তিশালী হোক তাদেরকে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে। গণ্ডামারায় এস আলমের কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নিরীহ শ্রমিকদের খুন করা হয়েছে। এলাকাবাসীদের জমি জোরপূর্বক কেড়ে নেওয়া হয়েছে। নিরীহ এলাকাবাসীদের পাখির মত গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। অথচ একটি হত্যাকাণ্ডের বিচারও হয়নি।'
আশিক বলেন, 'আমি বাঁশখালীর বিচারহীন মানুষের পাশে থাকতে এসেছি। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্বর থেকে ওঠে এসেছি। আমি ঢাকার রাজপথের উত্তাল-ভয়াবহ দিনগুলোতে আন্দোলন করতে গিয়ে দুইবার গুম হয়েছি। ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে ভাঙা শরীর নিয়ে জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে ঢাকার রাজপথে আওয়ামী পোষা বাহিনীদের সাথে যুদ্ধ করেছি। শুধু মিরপুরেই আমার সামনে ৫০/৬০ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয়েছেন। সে সময়ে আমিও তাদের মতো মৃত্যুবরণ করতে পারতাম, হয়তো আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়েছেন। এই হাসিনার পতনে একটু হলেও আমার অবদান রয়েছে।'
মফিজুর রহমান বলেন, 'বাঁশখালীতে এমন নেতা দরকার যে সব সময় জনগণের পক্ষে কথা বলবে, সাধারণ মানুষের হয়ে কাজ করবে। বাঁশখালীতে একটা রাস্তাঘাটও ভালো নাই। এখানে যদি হাজার হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট হয়, হাজার হাজার কোটি ভূমি অধিকরণ হয়। তাহলে কিছু টাকা খরচ করে কেন রাস্তাগুলো সংস্কার করা হলো না। আমি এই প্রশ্ন বাঁশখালীবাসীর সামনে রেখে গেলাম।'
তিনি বলেন, 'জিয়া পরিবার এদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ। স্বাধীনতার ঘোষণা থেকে গণতন্ত্র উত্তরণে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে জিয়া পরিবার। বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্র রক্ষার জন্য আপোষহীন ভাবে সংগ্রাম করে জেল-জুলুমের শিকার হয়ে বর্তমানে অসুস্থ অবস্থায় জীবন যাপন করছেন। বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এদেশে গণতন্ত্রকে তৃণমূলে দৃঢ় করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এত কিছুর পরেও তারেক রহমান তাঁর পরিবারের আশীর্বাদে নেতা হননি, তিনি এদেশের একজন সাধারণ রাজনীতিবীদের মতো মিথ্যা মামলা, জেল-জুলুম এবং মিথ্যা অপ-প্রচার সহ্য করে রাজনৈতিক নেতৃত্ব গ্রহণ করেছেন।'
এ সময় লিফলেট বিতরণকালে শেখেরখীল ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি জালাল উদ্দিন, গণ্ডামারা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফ, উপজেলা যুবদল নেতা জুনাইদুল করিমসহ উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এফপি/অ