Dhaka, Saturday | 18 October 2025
         
English Edition
   
Epaper | Saturday | 18 October 2025 | English
চলে গেলেন ভাষা সৈনিক আহসান উল্লাহ
জাতিসংঘ মিশন থেকে ১৩১৩ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী প্রত্যাহার
শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির সঙ্গে বিএনপি একমত: তারেক রহমান
নিকাব নিষিদ্ধে পর্তুগাল পার্লামেন্টে বিল পাস
শিরোনাম:

নদী গর্ভে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গাছতলায় চলছে পাঠদান

প্রকাশ: শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:০১ পিএম আপডেট: ১৮.১০.২০২৫ ১২:০৩ পিএম  (ভিজিটর : ২৮)

অবিরাম নদীভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার চানন্দী ইউনিয়নের ইসলামপুর দাখিল মাদ্রাসা। নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়া প্রিয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জায়গায় এখন কেবল স্মৃতি। স্থানীয়দের সহযোগিতায় মাদ্রাসার টিনসেড ঘরের ভেড়া চাল খুলে রাস্তার পাশে রাখা হয়েছে। অস্থায়ীভাবে কোনরকম খোলা আকাশের গাছতলায় চলছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান। এতে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।


সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, ইসলামপুর বাজারের দক্ষিণ পাশে মাদ্রাসার প্রধান মাওলানা আব্দুল আহাদের বাড়ির উঠোনে ১০-১২টি বেঞ্চে বসে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। গাছতলায় দাঁড়িয়ে দুই শিক্ষক শিশুদের পাঠদান করছেন। রোদে ঝলসানো মুখে ঘাম ঝরছে শিক্ষার্থীদের। সাংবাদিকদের দেখে ছুটে আসেন শিক্ষক ও স্থানীয়রা। তারা দেখান নদীতে ভাঙনের অপেক্ষায় থাকা মাদ্রাসার ভিটির অবশিষ্টাংশ। স্থানীয়দের আশঙ্কা, কয়েকদিনের মধ্যেই হয়তো সেটিও নদীগর্ভে হারিয়ে যাবে।


স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিনই নদী গ্রাস করছে তাদের জীবনের অংশ। ভিটেমাটি হারিয়ে কেউ হয়েছেন গৃহহীন, কেউ শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। ইসলামপুর দাখিল মাদ্রাসা শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, ছিল এলাকার সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু। সেটি হারিয়ে যাওয়ায় স্থানীয়দের হৃদয়ে গভীর শূন্যতা তৈরি হয়েছে।


সহকারী শিক্ষক এ টি এম আমিরুল ইসলাম জানান, মাদ্রাসায় আগে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী ছিল। নদীভাঙনের পর অনেক পরিবার ঘরবাড়ি হারিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। তবুও শতাধিক শিক্ষার্থী এখনো অস্থায়ীভাবে পাঠদানে অংশ নিচ্ছে। রোদ-বৃষ্টি, ঝড়-ঝঞ্ঝা সত্ত্বেও শিক্ষকরা বিনা বেতনে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন।


শিক্ষার্থী ছালমা আক্তার জানায়, আমরা মাদ্রাসায় আসি কারণ এখানেই আমাদের শিক্ষক আর বন্ধুরা আছে। আগে বড় ভবনে পড়তাম, এখন রোদ-বৃষ্টির মধ্যে বসে পড়ি। বৃষ্টি এলে বই ভিজে যায়, তখন আর ক্লাস করতে পারিনা। আশেপাশে আর কোন মাদ্রাসা নেয় আমরা যে পড়ালেখা করবো।


ইসলামপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল খালেক জানান, স্থানীয়দের উদ্যোগে ২০০১ সালে ১৫০ শতক জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলামপুর দাখিল মাদ্রাসা। দুইটি বড় টিনের ঘর ছিল সেখানে। কিন্তু ভয়াবহ নদীভাঙনে নিমিষে সব বিলীন হয়ে গেছে। গত ১০ বছরে চানন্দী ইউনিয়নে অন্তত শতাধিক মসজিদ, মাদ্রাসা ও বিদ্যালয় নদীতে তলিয়ে গেছে।


মাদ্রাসার প্রধান মাওলানা আব্দুল আহাদ বলেন, নদী একেবারে ঘেঁষে আসায় দুই মাস আগে মাদ্রাসায় পাঠদান বন্ধ করতে হয়। তখন ছাত্র-ছাত্রী ছিল ২৮৫ জন। এখন গাছতলায় ৭০-৮০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ক্লাস চালাচ্ছি। বাকিদের অনেকেই অন্যত্র চলে গেছে, কেউ কেউ পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছে। আমরা চাই সরকার যেন দ্রুত এই ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়।


তিনি আরও জানান, পশ্চিম পাশে নদীভাঙন রোধে কাজ শুরু হলেও পূর্ব পাশের বিশাল এলাকা এখনো অরক্ষিত। মাদ্রাসার জন্য নতুন জায়গা খোঁজা হচ্ছে। কোথাও উপযুক্ত জায়গা পেলে ভাঙন থেকে বাঁচানো টিনসেড ঘরগুলো সেখানে পুনর্গঠন করা হবে।


উল্লেখ্য, অব্যাহত নদী ভাঙনে চানন্দী ইউনিয়নের অন্তত ১০টি গ্রাম সম্পূর্ণ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছেএতে শত শত পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে দুঃসহ জীবনযাপন করছেস্থানীয়রা দাবি করেছেন, নদীভাঙন রোধে জরুরিস্থায়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন ছাড়া এই অঞ্চলের শিক্ষাজনজীবন রক্ষা সম্ভব নয়


এফপি/অআ

সর্বশেষ সংবাদ  
সর্বাধিক পঠিত  
YOU MAY ALSO LIKE  
Editor & Publisher: S. M. Mesbah Uddin
Editorial, News and Commercial Offices: Akram Tower, 15/5, Bijoynagar (9th Floor), Ramna, Dhaka-1000
Call: 01713-180024, 01675-383357 & 01840-000044
E-mail: news@thefinancialpostbd.com, ad@thefinancialpostbd.com, hr@thefinancialpostbd.com
🔝