নেত্রকোনায় নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহার ও রাস্তার পাশে ড্রেন গুলোতে ময়লা আবর্জনার কারণে মারাত্মক হুমকির মুখে দাঁড়িয়েছে পরিবেশ।
এদিকে নেত্রকোনা জেলা শহরের রাস্তাঘাট সহ সারা জেলায় বিভিন্ন এলাকার নদ-নদীগুলোই সবচেয়ে বেশি নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহার ও ময়লা আবর্জনার ফলে দূষণের শিকার হচ্ছে। যেসব ময়লার মধ্যে অধিকাংশই বিভিন্ন পণ্যের মোড়ক, প্লাস্টিকের প্যাকেট, বোতল ও পলিথিনের ব্যাগ রয়েছে।
নেত্রকোনা জেলা শহরের মগড়া নদীর আশপাশের ও রাস্তার পাশের বাসিন্দাদের সমস্ত ময়লা আবর্জনা প্রতিদিন নিয়ম করে মগড়া নদীতে ও রাস্তার উপর ফেলা হচ্ছে বলে পৌরবাসীর অভিযোগ। আর ওসব বর্জ্য দিয়ে নদীকে এমনভাবে ভরে রাখা হয়েছে যে কোনো দিকে আর পানি চলাচলের কোনো অবস্থা নেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নেত্রকোনা শহরের বিভিন্ন সড়কে ময়লার দুর্গন্ধে হাঁটা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে চলমান এই সংকটের কার্যকর সমাধান হয়নি। স্থানীয় প্রশাসন, পৌর কর্তৃপক্ষ ও নাগরিক সমাজ সবাই সমস্যাটি সম্পর্কে অবগত থাকলেও প্রত্যাশিত উদ্যোগের অভাবে পরিস্থিতি দিন দিন আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে।
নেত্রকোনা শহরের প্রাণকেন্দ্র মালনী রোডে গেলেই চোখে পড়ে রাস্তার মাঝখানে জমে থাকা ময়লার স্তূপ। কোথাও খাবারের উচ্ছিষ্ট, কোথাও বাজারের পচা সবজি, আবার কোথাও প্লাস্টিক ও পলিথিনের থলে, সব মিলে এক ভয়াবহ অবস্থা। সকাল কিংবা সন্ধ্যা, সবসময়ই দুর্গন্ধে শ্বাস নেওয়া দুঃসহ হয়ে ওঠেছে।
এদিকে শহীদ মিনার সংলগ্ন এলাকা, ঢাকা বাস টার্মিনাল রোডের মাইক্রো স্ট্যান্ড এলাকার অবস্থাও একই রকম। শহরের যেদিকে তাকানো যায় সেখানেই ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। অথচ নেত্রকোনা পৌরসভা প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে পরিচিত।
এবিষয়ে নেত্রকোনা গ্রিন ভয়েস নামে একটি পরিবেশবাদী যুব সংগঠনের নেত্রকোনা সরকারি কলেজ শাখার সদস্য সচিব শেখ সাবিকুন্নাহার অনন্যা বলেন, “ময়লা আবর্জনা থেকে উৎপন্ন জীবাণু সহজেই বাতাস, পানি ও খাবারের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। এতে করে শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য এই ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। তাই আমরা পৌরবাসী পৌরসভার প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তিনি যেন দ্রুত এবিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।”
এবিষয়ে নেত্রকোনা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ আব্দুল্লাহ আল মতিন বলেন, নেত্রকোনা শহরে যত্রতত্র ময়লা ফেলার কারণে শহরের পরিবেশ ভয়াবহভাবে দূষিত হচ্ছে। এতে করে পচা দুর্গন্ধ ছড়িয়ে নানা রোগের জন্ম দিচ্ছে। এতে শুধু শহরবাসী নয়, আশেপাশের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এবিষয়ে নেত্রকোনা পৌরসভার প্রশাসক আরিফুল ইসলাম সরদার বলেন, পৌরসভা এলাকার উন্নয়নমূলক একটি মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন করা হবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আমরা অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার করার উদ্যোগ নিয়েছি। তবে সীমিত সম্পদ ও জনবল নিয়ে কাজ করতে গিয়ে কিছু সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তবে নাগরিকরা শিগগিরই দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখতে পাবেন। আমরা চাই সবাই সচেতন হোক এবং নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলুক, তাহলেই শহর পরিষ্কার রাখা সহজ হবে।
এফপি/অআ