লেখক, গবেষক ও বামপন্থী রাজনীতিক বদরুদ্দীন উমর মারা গেছেন। রোববার সকাল ১০টা ৫ মিনিটে রাজধানীর কল্যাণপুরের বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন।
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘উনার শারীরিক অবস্থা আগে থেকেই খারাপ ছিল। সকালে অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।’
বদরুদ্দীন উমরের বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় আক্রান্ত ছিলেন। শ্বাসকষ্ট ও লো প্রেশারের কারণে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আজ সকালে তাঁকে মিরপুরের রূপনগরের বাসা থেকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিছুদিন আগেও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। দিনদশেক চিকিৎসা নিয়েছিলেন।
বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী ছিলেন বদরুদ্দীন উমর। এক সময় পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছিলেন। ২০০৩ সালে তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নামে একটি সংগঠন গড়ে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন।
তাঁর জন্ম ১৯৩১ সালে ২০ ডিসেম্বর ভারতের বর্ধমানে। ১৯৫০ সালে পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় চলে আসেন। এরপর তিনি ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্নাতক শেষ করে ১৯৫৫ সালে দর্শন শাস্ত্রে স্নাতকোত্তর করেন। এরপর পড়তে যান যুক্তরাজ্যে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স করেন ফিলোসফি, পলিটিক্স ও ইকোনমিক্সে (পিপিই)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স শেষ করার আগেই দর্শন বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন বদরুদ্দীন উমর। ১৯৫৬ সালে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ এবং ১৯৫৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে শিক্ষক হিসেবে তিনি যোগ দেন।
এ বছরের মার্চে অন্তর্বর্তী সরকার তাঁকে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত করলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি বলেছিলেন, ‘১৯৭৩ সাল থেকে আমাকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে পুরষ্কার দেওয়া হয়েছে। আমি সেগুলোর কোনোটি গ্রহণ করিনি। এখন বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছে। এজন্য তাদের ধন্যবাদ। কিন্তু তাদের দেওয়া এই পুরস্কারও আমার পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।’
এফপি/এমআই