আওয়ামী লীগের এক নেতার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর অভিযোগে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার সাহতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে।
২০২৪ সালের মে মাসে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী এক আওয়ামী লীগ নেতার পক্ষে প্রচারণা চালানোর অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সরকারি চাকরিবিধি ও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে কর্তৃপক্ষ।
রোববার(৭ সেপ্টেম্বর ) দুপুরে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদ আজম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত আগস্টের শেষ দিকে এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে এ মামলা হয়েছে বলে জানান তিনি। এরশাদ মিয়া বারহাট্টা উপজেলার সাহতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে কর্মরত রয়েছেন। তিনি উপজেলার সাহতা ইউনিয়নের সফরবাংলা গ্রামের বাসিন্দা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২১ মে বারহাট্টা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের আগে ১০ মে চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল কবির খোকনের পক্ষে প্রচারণা চালান শিক্ষক এরশাদ মিয়া। নির্বাচনী সভায় এরশাদ মিয়াকে দেখা যায়। প্রচারণা সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় সরকারি চাকরিবিধি ও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ১৪ মে স্থানীয় শফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। তৎকালীন জেলা রিটানিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাফিকুজ্জামান অভিযোগ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। ওই সময় তদন্তকাজ আওয়ামী লীগ নেতাদের দিয়ে ধামাচাপা দেন অভিযুক্ত শিক্ষক।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ওই ঘটনায় চলতি বছরের ২২ এপ্রিল শিক্ষক এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন আশিফউর রহমান নামে আরেক ব্যক্তি। অভিযোগে বলা হয়, এরশাদ মিয়া শুধু একজন শিক্ষক নন, তিনি এলাকায় একটি প্রভাবশালী চক্র গড়ে তুলেছেন। তার বিরুদ্ধে সরকারি চাকরিবিধি ও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের পাশাপাশি গ্রাম্য কলহ উসকে দেওয়া, গ্রামে সুদে টাকা লাগানো, অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা, লাঠিয়াল বাহিনী ব্যবহার করে সরকারি খাস জমি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি দখল করে ভোগদখল করা এবং নিয়মিত জুয়ার আসর বসান তিনি।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গত ২২ মে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অভিযোগটি তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে জুলাই মাসে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। পরে আগস্টের শেষ সপ্তাহে শিক্ষক এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করে কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্ত শিক্ষক এরশাদ মিয়া তার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদ আজম বলেন, অভিযোগ তদন্ত শেষে শিক্ষক এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী মঙ্গলবার শুনানি রয়েছে। এগুলো বিভাগীয় মামলার প্রসেস। সকল প্রক্রিয়া শেষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এফপি/রাজ