কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ের ছয় মাসের মাথায় সামিহা খাতুন (১৫) নামে এক কিশোরী গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মির্জাপুর এলাকা থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সামিহা ওই গ্রামের জীবন হোসেন (২২) এর স্ত্রী।
স্বজনদের অভিযোগ, পারিবারিক কলহের জেরে সামিহাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্বামী জীবন, শ্বশুর সাহেব আলী ও শাশুড়ি নাজমা খাতুন। হত্যার পর আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে নিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে মরদেহ ঝুলিয়ে রেখে পালিয়েছেন তারা।
পুলিশ ও স্বজনরা জানায়, প্রায় ৬ মাস আগে প্রেমের সম্পর্ক থেকে উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের বিলকাঠিয়া গ্রামের আনিসুর রহমানের মেয়ে সামিহাকে বিয়ে করেন শিলাইদহ ইউনিয়নের সাহেব আলীর ছেলে জীবন হোসেন। বিয়ের পর থেকে আসবাবপত্র ও সাংসারিক জিনিসপত্র নিয়ে তাদের মধ্যে কলহ লেগেই থাকত।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামিহার সঙ্গে তার শ্বশুর, শাশুড়ি ও স্বামীর ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে সামিহাকে ব্যাপক মারধর করা হয়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) সকালে স্বজনদের খবর দেওয়া হয় সামিহা আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে ছুটে এসে স্বজনরা দেখেন শ্বশুর বাড়ির লোকজন কেউ নেই। দুপুরে সরেজমিনে থানায় গিয়ে দেখা যায়, থানা চত্বরে পিকআপে রাখা রয়েছে সামিহার মরদেহ। স্বজনরা থানার বাইরে বসে আহাজারি করছেন।
এসময় সামিহার বড় বোন সাকিবা খাতুন বলেন, ‘প্রেমের জেরে জোর করে সামিহাকে বিয়ে করেছিল জীবন। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই আসবাবপত্র না দেওয়া নিয়ে কলহ হতো। পারিবারিক কলহের জেরেই সামিহাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি। পরে মরদেহ নিজঘরে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে পালিয়েছে। থানায় মামলা করা হবে।’
সামিহার ফুপু রাজিয়া খাতুন বলেন, ‘সারা শরীরে মাইরের দাগ। পা দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। ওকে (সামিহা) হত্যা করা হয়েছে। আপনেরা এর বিচার করেন।’
ঘটনার পর থেকেই শ্বশুর বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে বলে জানিয়েছেন কুমারখালী থানার উপ-পরিদর্শক প্রকাশ চন্দ্র বাছাড়।
তিনি বলেন, শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সন্দেহজনক হওয়ায় মরদেহ সুরতহাল করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। ঘটনার পর থেকে পলাতক থাকায় নিহতের স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এফপি/রাজ