চাঁদপুরের মতলব উত্তরে ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের চরমাছুয়া এলাকায় ধনাগোদা নদীর বুক চিরে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে ‘ধনাগোদা রিভারভিউ রেস্টুরেন্ট’। প্রায় ২০০ ড্রামের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা এই বিশাল ভাসমান রেস্টুরেন্ট এখন নদী দখলের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অথচ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) ৪ জুন ২০২৫ তারিখে পাঠানো অপসারণ চিঠির পরও রেস্টুরেন্টটি দিব্যি চালু রয়েছে। যেন প্রশাসনের মাথাব্যথাই নেই।
বাপাউবো’র ডুবগী পানি উন্নয়ন শাখার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আবুল হোসেন খান এর মাধ্যমে রেস্টুরেন্টটির বিরুদ্ধে উচ্ছেদ নোটিশ জারি করেন। তাতে মোঃ সাইফুল মোল্লা ও মোঃ সবুজ মিয়াকে ৩ (তিন) দিনের মধ্যে নিজ ব্যবস্থাপনায় স্থাপনাটি সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এর কপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সহকারী কমিশনার (ভূমি), থানা পুলিশ, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট সাতটি দপ্তরে পাঠানো হয়।
কিন্তু বাস্তবতা হলো- চিঠি পাঠিয়ে বাপাউবো নিশ্চুপ, আর রেস্টুরেন্ট চলছে বীরদর্পে, যেন কারও কোনো ক্ষমতা নেই এটি বন্ধ করার।
এ নিয়ে মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, আমরা অপসারণের চিঠির একটি অনুলিপি পেয়েছি। এটা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহণকৃত জায়গা, উচ্ছেদের দায়িত্ব তাদের।
এই বক্তব্যে আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে, প্রশাসনের ভূমিকা কতটা দায়িত্বহীন। প্রশ্ন উঠছে- সরকারি সম্পত্তি দখলের মতো স্পষ্ট অপরাধেও কেন ইউএনও নিজে উদ্যোগ নিচ্ছেন না?
স্থানীয়দের অনেকেই বলছেন, এই অবৈধ রেস্টুরেন্ট প্রশাসনের একাংশকে ম্যানেজ করেই চলছে। না হলে এক মাস পার হয়ে গেছে, এতদিনেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন?
কেউ কেউ নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, রেস্টুরেন্ট মালিক প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থাকায় প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছে।
বাংলাদেশ পানি আইন, ২০১৩ অনুসারে, জলাধার বা নদীর জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক উচ্ছেদ করতে পারে, জরিমানা আরোপ করতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম সাহেদের ভাষ্য আমরা বিষয়টি জানি। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে রেস্টুরেন্টটি উচ্ছেদ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
এফপি/রাজ