জয়পুরহাটে জেলা প্রশাসনের একটি সরকারি গাড়ির ধাক্কায় ৪ জন গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় কেউ বাদি হয়ে মামলা না করায় স্বপ্রণোদিত হয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৮ জুলাই) জয়পুরহাট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শ্যাম সুন্দর রায় ফেসবুকের একটি স্ট্যাটাস আমলে নিয়ে জয়পুরহাট থানার অফিসার ইনচার্জকে তদন্তপূর্বক আগামী ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ জুন ২০২৫ তারিখ সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটে জয়পুরহাটের সদর উপজেলার পুরানাপৈল ইউনিয়নের গতনশহর এলাকায় একটি যাত্রীবাহী ভ্যানকে জেলা প্রশাসনের একটি সরকারি গাড়ি পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে ভ্যানে থাকা ৪ জন গুরুতর আহত হন।
আহতরা হলেন, ফাতেমা বেগম (৫৫), আব্দুল মামুদ (৩০), হামিদুল ইসলাম (৪৮), মোছাঃ শিল্পি (৪৫)। প্রাথমিকভাবে আহতদের জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলেও, পরবর্তীতে দুইজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনার পর ‘আমাদের জয়পুরহাট’-নামক একটি ফেসবুক গ্রুপে আহতদের পরিবারকে মামলা না করার জন্য চাপ প্রয়োগ ও চাকরির প্রলোভন দেখানোর অভিযোগ সংবলিত একটি পোস্ট প্রকাশিত হয়। পোস্টটি সোমবার বিকেল পৌনে পাঁচটা দিকে আদালতের দৃষ্টিগোচর হলে, আদালত তাৎক্ষণিকভাবে নিজ উদ্যোগে আমলে নেন।
আদেশে আদালত উল্লেখ করেন, ফেসবুক পোস্টে অপরাধের সময় ও স্থান উল্লেখ থাকলেও অভিযুক্তদের নাম, সুনির্দিষ্ট পরিচয়, সাক্ষীর বিবরণ এবং ঘটনার আলামতের তথ্য অনুপস্থিত। এছাড়া আহতদের চিকিৎসা সংক্রান্ত মেডিকেল সার্টিফিকেটও সংযুক্ত নেই। ফলে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রয়োজন। এ প্রেক্ষিতে আদালত পুলিশ পরিদর্শক বা সমপর্যায়ের কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে জয়পুরহাট সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আরিফুর রহমান মামলার কপি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে রাজি হননি তিনি।
এ বিষয়ে পাঁচবিবি উপজেলার খাসবাগুড়ি গ্রামের আহত ব্যক্তি হামিদুল ইসলাম ও শিল্পী বেগমের বাড়িতে গেলে তারা জানায়, জয়পুরহাটের ডিসির সরকারি গাড়ির ধাক্কায় তারা আহত হয়েছেন এবং আহত হওয়ার পর জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে জেলা প্রশাসক আহতদের দেখতে যান এবং গুরুতর আহত ও হামিদুল ইসলামকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হলে সেখানে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এনডিসির মাধ্যমে চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন এবং অপারেশনের খরচ বহন করেন, তবে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
এসময় আহত হামিদুলের ছেলে সাব্বির সাংবাদিকদের জানান, জেলা প্রশাসনের এনডিসির নাম্বার থেকে (যেটা বর্তমানে ব্যবহার করছেন ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জ্বল বাইন) ফোন করে সাংবাদিকদের তথ্য দিতে নিষেধ করেন এবং সাব্বির এর বাবা হামিদুল ইসলামকে ভ্যান ও সাব্বিরকে চাকরি দেয়া হবে বলে আশ্বাস দেয়া হয়।
এফপি/রাজ