চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) হিলভিউ আবাসিক এলাকার দশটি সড়কে আলোকায়ন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ২১ লাখ ৭০ হাজার টাকার এই প্রকল্পে নিম্নমানের ব্র্যান্ডবিহীন বাতি ও পুরনো যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়েছে। চুক্তির চেয়ে কম সরঞ্জাম বসিয়ে সম্পন্ন দেখানো হয়েছে কাজ। তদন্তে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির প্রমাণ মিলেছে।
২০২৪ সালের ১১ জুলাই থেকে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে আলো স্থাপনের কার্যাদেশ দেওয়া হয় ‘মেসার্স মিশুক কনস্ট্রাকশন’কে। প্রকল্পটি তদারকি করেন চসিক বিদ্যুৎ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মো. কামাল হোসেন সেলিম। চলতি বছরের জানুয়ারিতে গোপনে বিল অনুমোদনের চেষ্টা করা হলে চসিকের দুই পরিদর্শক—মোহাম্মদ মহসিন ও বাসু বিশ্বাস এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রকল্পে চুক্তির উল্লেখ থাকা নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের এলইডি বাতি স্থাপন না করে অখ্যাত ও ব্র্যান্ডবিহীন বাতি বসানো হয়। সরবরাহ করা তারেও কোনো ব্র্যান্ডের নাম ছিল না। মাঠপর্যায়ের পরিদর্শনে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি বাতি কাজ করছে না, অনেক যন্ত্রাংশ পুরনো।
চুক্তি অনুযায়ী বসানোর কথা ছিল ৪৫০০ মিটার ২৫ আরএম ক্যাবল, বসানো হয়েছে মাত্র ৩৯৭০ মিটার। ১০৫টি জিআই ব্রেকেটের স্থলে বসেছে ৯৪টি এবং ১০৫টি স্পুল রেকের জায়গায় দেওয়া হয়েছে ৮৬টি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকৌশলী সেলিম মালামাল বুঝে নেওয়া ও স্থাপনের পুরো প্রক্রিয়া এককভাবে সম্পন্ন করেছেন—গ্রহণ কমিটি বা অন্য কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সম্পৃক্ত না করে। এতে স্বার্থের সংঘাত ও সরকারি অর্থ আত্মসাতের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
প্রকল্পে অনিয়মের দায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স মিশুক কনস্ট্রাকশন’ ও প্রকৌশলী মো. কামাল হোসেন সেলিমের ওপর বর্তায় বলে মত দেয় তদন্ত কমিটি। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে চুয়েট বা অন্য কোনো স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সরবরাহকৃত মালামালের মান যাচাই করার সুপারিশ করা হয়।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জানান, তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি। সুপারিশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এফপি/এমআই