চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলি চালিয়ে আন্দোলনকারীদের হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৬৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের হয়েছে। আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী এবং গণমাধ্যমকর্মীরাও।
মামলাটি দায়ের করেন সাইফুদ্দীন মুহাম্মদ এমদাদ নামের এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী, যিনি বর্তমানে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে বসবাস করছেন এবং ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্র। তার গ্রামের বাড়ি সন্দ্বীপ উপজেলার হারামিয়া ইউনিয়নে।
এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট চট্টগ্রাম শহরের ওয়াসা মোড়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে গুলি ছোড়ে। এতে তিনি নিজে গুরুতর আহত হন এবং চিকিৎসার পরও ডান চোখের দৃষ্টিশক্তি হারান।
মামলায় অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল, ওবায়দুল কাদের, হাছান মাহমুদ, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কামরুল ইসলাম, মো. আলী আরাফাতসহ বহু প্রাক্তন মন্ত্রী ও এমপি। এছাড়া রয়েছেন চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র, জাতীয় পার্টির নেতা, হামীম গ্রুপ, পিএইচপি গ্রুপ, এফবিসিসিআই, ও জিপিএইচ ইস্পাতের শীর্ষ কর্মকর্তারা। উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে আছেন সাবেক এমপি নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ও তার ছেলে ফারাজ করিম চৌধুরী, এ কে আজাদ, সুফি মুহাম্মদ মিজানুর রহমান ও আমির হোসেন সোহেল, মাহবুবুল আলম ও রাইসা মাহবুব, এবং সাংবাদিকরাও।
খুলশী থানার ওসি আফতাব উদ্দিন জানান, মামলা গ্রহণ করা হয়েছে এবং পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে দেশজুড়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ব্যাপক সহিংসতা দেখা দেয়, যার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও রাজনৈতিক নেতাদের দায়ী করা হয়। এ ঘটনায় চট্টগ্রামেই এর আগে ১৪৮টি মামলা হয়েছে। তবে সর্বশেষ এই মামলাটিকে সবচেয়ে বড় এবং প্রভাবশালী রাজনৈতিক-ব্যবসায়ী চক্রের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ হিসেবে বিবেচনা করছেন বিশ্লেষকরা।
এফপি/এমআই