কুড়িগ্রামে টানা বৃষ্টির কারণে জেলা শহর জুড়ে অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে জনসাধারণ। জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১০২ দশমিক ৮ মিলিমিটার।
মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১০২ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী কয়েক দিন আরও ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে, অতি বৃষ্টিপাত ও পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় জেলা শহরের ডিসি অফিস, এসপি অফিস, জজকোর্ট, ফায়ার স্টেশন, হাটিরপাড়, বৈশ্যপাড়া, হাসপাতালপাড়া, মিস্ত্রিপাড়া, মধুর মোড়, হরিজন পল্লী, পিটিআই চত্বর, পৌর বাজার, ভোকেশনাল মোড়, সওদাগরপাড়া, রৌমারীপাড়া, মজিদা কলেজ, থানাপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ড্রেনগুলো পরিষ্কার না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া কোথাও মাটির স্তূপ পড়ে ভরাট হয়ে যাওয়া, কোথাও ড্রেন সরু হয়ে ভেঙে যাওয়ায় এবং বৃষ্টির পানি নামার খালগুলো দখল করে ভরাট করায় এ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
জলাবদ্ধতার কারণে সড়ক গুলোতে পানি জমে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে পথচারী ও যানবাহনগুলো।
স্থানীয়রা আরও জানান, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে একই অবস্থা পয়ঃনিষ্কাশনের। বৃষ্টি নামলে ড্রেনে পানি জমে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে। পৌর কর্তৃপক্ষকে স্থায়ীভাবে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না।
কুড়িগ্রাম শহরের পৌরসভা এলাকার অনেকেই বলেন, সোমবার রাত থেকে শুরু হওয়া টানা অতিবৃষ্টি মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত হয়। এতে ড্রেনের পানি নেমে না যাওয়ায় পানি ঘরে ঢুকে হাঁটু ছুঁইছুঁই অবস্থায় সবাই বিপাকে পড়েছে। ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করায় এমন বিড়ম্বনায় বারবার পড়তে হয়। আরও জানায়, ১৬ বছর ধরে একই অবস্থা শহরের বিভিন্ন এলাকার। বৃষ্টি এলেই শহর ভেসে যায়, ফেসবুকে লেখালেখিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয় না।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী বলেন, এটি দীর্ঘদিনের সমস্যা। গত ১৬ বছরে কোনো ধরনের কাজ হয়নি। এটি তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান করতে পারব না। আমরা দ্রুত নতুন করে ড্রেন সংস্কার ও নতুন ব্লক তৈরি করার পরিকল্পনা করছি। আপাতত ড্রেনের ওপর থেকে অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করে পানি নেমে যাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছি।
এফপি/রাজ