জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে আসা ছাত্রলীগ নেতা মাসুদ রানাকে অবশেষে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। ৬ মে তাকে জামালপুর কোর্টে চালান দেয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন মেলান্দহ থানার অফিসার ইনচার্জ।
গ্রেপ্তারকৃত মাসুদ রানা সমাজকর্ম বিভাগের মাস্টার্স ফাইনাল ইয়ারের শিক্ষার্থী। মাসুদ রানা সমাজকর্ম বিভাগ ছাত্রলীগের আহবায়ক এবং মির্জা আজম হলের সহসভাপতি ছিল।
তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে হুমকি-ধমকিসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের অভিযোগ ওঠেছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ন্যায় মাসুদ রানাও আত্মগোপনে ছিল। ৫ মে মাস্টার্স ফাইনাল ইয়ারের প্রথম সেমিস্টারের প্রথম পরীক্ষা দিতে আসছিল। পরীক্ষা শেষে নিরাপত্তার প্রশ্নে শিক্ষকদের সহায়তায় মাসুদ রানাকে একটি গাড়িতে তোলে দেয়া হয়। এ সময় ছাত্ররা শ্লোগান দিয়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে আটকে রাখে গলায় জুতার মালা পরানোর প্রস্তুতি নেয়। ঘোলাটে পরিস্থিতির খবর পেয়ে সন্ধ্যার দিকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সহসমন্বয়ক লিটন আকন্দ, ছাত্র শিবিরের মুরসালিন এবং ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক একেএম আব্দুল্লাহ আল মাসুদ জানান-বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট আটককৃত ছাত্রলীগ নেতাসহ আরো ১৯ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে সাধারণ ছাত্রদের নিয়ে আমরা অভিযোগ করেছি। এরপরও কিভাবে সে পরিক্ষায় অংশ নিল? শিক্ষকরা তাকে নিরাপদে যেতে সহায়তাও করেছেন। এ ক্ষোভে আমরা পুলিশে দিয়েছি।
এ বিষয়ে প্রোভিসি প্রফেসর ড. মোশারফ হোসাইনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি ছাত্রলীগ নেতার গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমি একটা মিটিং এ আছি। আপনারা পরীক্ষা হলের দায়িত্বে থাকা এবং ছাত্র কল্যাণ সেক্টরে যোগাযোগ করেন।
পরীক্ষা হলে দায়িত্বে থাকা সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষক ড. এএইচএম মাহবুবুর রহমান, ছাত্র কল্যাণ -পরামর্শ দপ্তরের এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম এবং সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান ও প্রক্টর ড. সাদিকুর রহমান ইমন জানান- মাসুদ রানা পরীক্ষা দিতেছে, এমন খবরে শিক্ষার্থীদের মাঝে হইচই পড়ে যায়। পরিক্ষা শেষ হবার ৫/১০ মিনিট আগেই মাসুদ রানার উত্তরপত্র জমা দেয়। নিরাপত্ত্বার প্রশ্নে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ মাসুদ রানাকে একটি গাড়িতে তুলে দিয়েছি। এ ছাড়া আমাদের করার কিছুই ছিল না।
অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম জানান- আটককৃত মাসুদ রানাকে যুবদল নেতা মনোয়ার হোসেন মনুর দায়েরকৃত মালঞ্চ এলাকায় নাশকতার একটি মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে কোর্টে চালান দেয়া হয়েছে।
এফপি/রাজ