ভারত সরকার একটি নতুন কৌশল গ্রহণ করেছে, যার মাধ্যমে তারা বিশ্বব্যাপী অস্ত্র রফতানি বাড়াতে চায়। এই কৌশলের মূল উপাদান হলো রাষ্ট্রায়ত্ত এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক (এক্সিম ব্যাংক) এর মাধ্যমে কম সুদে ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রদান। এই ঋণ সুবিধা মূলত সেই দেশগুলোর জন্য, যারা ঐতিহাসিকভাবে রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল ছিল অস্ত্র সরবরাহের ক্ষেত্রে, কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের পর বিকল্প খুঁজছে।
ভারত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১৪.৮ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদন করেছে, যা ২০২০ সালের তুলনায় ৬২ শতাংশ বেশি। মোদি সরকারের লক্ষ্য ২০২৯ সালের মধ্যে এই রফতানির পরিমাণ ৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানো।
ভারত অন্তত ২০টি নতুন দেশে প্রতিরক্ষা সংযুক্তি পাঠানোর পরিকল্পনা করছে ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে। এর মধ্যে রয়েছে আলজেরিয়া, মরক্কো, গায়ানা, তাঞ্জানিয়া, আর্জেন্টিনা, ইথিওপিয়া ও কম্বোডিয়া। এই সংযুক্তিদের কাজ হবে ভারতীয় অস্ত্রের বিপণন এবং স্বাগতিক দেশের সামরিক চাহিদা বিশ্লেষণ।
ভারতীয় অস্ত্রের মূল্যের প্রতিযোগিতামূলক হওয়া একটি বড় সুবিধা। উদাহরণস্বরূপ, যেখানে ইউরোপে ১৫৫ মিমি আর্টিলারি গোলার দাম ৩ হাজার ডলারের বেশি, সেখানে ভারত সেটি তৈরি করছে ৩০০-৪০০ ডলারে। একইভাবে, ভারতীয় হাউইটজার বিক্রি হচ্ছে ৩০ লাখ ডলারে, যেখানে ইউরোপীয় প্রতিদ্বন্দ্বীদের দাম তার দ্বিগুণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের এই কৌশল সফল হতে হলে তাদের নিজস্ব অস্ত্র ব্যবহারের কার্যকারিতা প্রমাণ করতে হবে। এছাড়া, ঋণ প্রদানে আর্থিক ঝুঁকি এবং ভূরাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া মোকাবিলা করাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
সার্বিকভাবে, ভারতের এই নতুন কৌশল বিশ্ববাজারে তাদের অস্ত্র রফতানি বাড়াতে এবং রাশিয়ার ঐতিহ্যবাহী বাজারে প্রবেশ করতে সহায়ক হতে পারে। তবে, এটি সফল করতে হলে কার্যকর বাস্তবায়ন এবং কৌশলগত পরিকল্পনা প্রয়োজন।
এফপি/রাজ