নাটোরের লালপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ঈদগাহ মাঠে ঈদের নামাজ শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে অওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা গেছে। সংঘর্ষে একজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৭ জন আহত হয়েছেন।
প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান, ঈদের নামাজ শেষে খুতবার আগে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় বিএনপি ও স্থানীয়রা এর প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে ঈদগাহ মাঠে হট্টগোল হয়। পরে সেখানে থাকা মুসল্লিরা বিষয়টির মিমাংসা করে দেন এবং খুতবা শেষে মোনাজাতের মধ্য দিয়ে নামাজ শেষ হয়। পরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রস্ততি নিয়ে এসে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করেন। এতে সুজাত আলী ও অজ্ঞাত আরেকজন গুলিবিদ্ধ হন। আহত হন সাব্বির হোসেন (২৪) নামের আরেক ব্যক্তি। তাকে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। গুলিবিদ্ধ দুজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে লালপুর ইউনিয়ন বিএনপি এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে বক্তব্য দেন সাবেক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আশরাফুল ইসলাম লুলু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবি, বিএনপি নেতা এটিএম জাহিদুল আলম ডলার ও জিয়া। তারা অভিযোগ করেন, ফ্যাসিবাদী শক্তি পরিকল্পিতভাবে ঈদের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে এবং প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে, যা জনমনে প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে।
বিএনপি নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
নাটোরের পুলিশ সুপার (এসপি) আমজাদ হোসাইন বলেন, ঈদ মাঠে জয় বাংলা স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কর্মীদের মধ্যে হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ দুজনকে রাজহশাহী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে পাঠানো হয়েছে। মারামারিতে সম্পৃক্ত ছিল এরকম ৯ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। তারা সংঘর্ষে জাড়িত কী-না যাচাই বাছাই চলছে।
এসপি আমজাদ হোসাইন আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঘটনাস্থলে ডিবি টিম, পুলিশ, যৌথবাহিনীসহ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এফপি/এমআই