‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’ ঘিরে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে কয়েক স্তরের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জেলা পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০টি চেকপোস্ট ও ৭টি বিশেষ টিমসহ পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে উৎসব উদযাপনে ৭টি বিশেষ বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কক্সবাজার জেলা পুলিশের ফোকাল পয়েন্ট ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) অলক বিশ্বাস সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অন্যদিকে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোকের কারণে, থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন নিয়ে সৈকতের বেলাভূমি বা উন্মুক্ত কোনো স্থানে আয়োজন থাকছে না কক্সবাজারে। তবে কিছু তারকা হোটেল,নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ইনডোর প্রোগ্রাম আয়োজন করছে। তবে বিশেষ মেহমান বাদে এসব অনুষ্ঠানে অন্যদের শরিক হওয়ার কোনো উপায় থাকছে না।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, থার্টি ফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে জেলা শহরসহ পর্যটন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট, টহল ও গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় ২টি মোবাইল টিম, ৭টি টহল টিম এবং ৪টি মোটরসাইকেল টিম সার্বক্ষণিক মাঠে কাজ করছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) দেবদূত মজুমদার জানান, শহরের প্রবেশপথে দূরপাল্লার বাস, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারে তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে। কেউ যেন মাদক বা কোনো ক্ষতিকর সামগ্রী বহন করতে না পারে, সেজন্য সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে। পাশাপাশি মহাসড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে হাইওয়ে পুলিশ।
এদিকে, মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ৭টি বিধি নিষেধ আরোপ করে জেলা পুলিশের পক্ষে ফোকাল পয়েন্ট ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অলক বিশ্বাস একটি বার্তা পাঠিয়েছেন। বার্তায় থার্টি ফাস্ট নাইট উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা পুলিশের পক্ষে আরোপিত বিধি নিষেধ অনুসরণের জন্য সবাইকে অনুরোধ করা হয়েছে।
বিধি-নিষেধগুলো হলো.....
১. সৈকত ও শহর এলাকায় আতশবাজি, পটকা ফাটানো এবং ফানুস ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এসব সামগ্রীর বিক্রি ও বিপণন কেন্দ্রগুলোও বন্ধ থাকবে।
২. উন্মুক্ত স্থানে বা রাস্তায় কোনো কনসার্ট, নাচ বা গানের অনুষ্ঠান আয়োজন করা যাবে না।
৩. ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সকল বার ও মদের দোকান বন্ধ থাকবে।
৪. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো ধরনের গুজব, অপপ্রচার বা উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত থাকতে হবে।
৫. উচ্চশব্দে হর্ন বাজানো, রেসিং বা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালানো যাবে না।
৬. নারী পর্যটকদের উত্ত্যক্ত করা বা ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৭. হোটেল-মোটেলের ইনডোর প্রোগ্রামের তথ্য এবং যে-কোনো সন্দেহভাজন ব্যক্তি সম্পর্কে পুলিশকে (ডিএসবি) অবহিত করতে হবে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, আগত পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। সৈকত, হোটেল-মোটেল জোন, পর্যটন স্পট ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এফপি/অ