আধুনিক ক্রিকেটে মাঠের লড়াইয়ের পাশাপাশি সম্প্রচারই হয়ে উঠেছে দর্শক আকর্ষণের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। খেলার উত্তেজনা ও সৌন্দর্য দর্শকের কাছে কতটা প্রাণবন্তভাবে উপস্থাপিত হচ্ছে, তার ওপরই অনেকটা নির্ভর করে টুর্নামেন্টের সৌন্দর্য। এদিক থেকে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) সম্প্রচার মান নিয়ে অতীতে দর্শক-সমর্থকদের অভিযোগের কমতি ছিল না। তবে চলতি মৌসুমে সেই চিত্র বদলাতে শুরু করেছে।
ঝকঝকে ও পরিচ্ছন্ন সম্প্রচারের জন্য স্টেডিয়ামের বিভিন্ন অংশে বসানো হয়েছে মোট ৩৮টি ক্যামেরা। এর মধ্যে রয়েছে ড্রোন ও বাগি ক্যামেরা। পাশাপাশি খেলোয়াড়দের প্রতিটি মুহূর্ত নিখুঁতভাবে ধারণ করতে মাঠের নানা জায়গায় স্থাপন করা হয়েছে বিশেষ ক্যামেরা। এবারের বিপিএলের সম্প্রচার দায়িত্বে রয়েছে টিপিটি গ্লোবাল।
প্রতিষ্ঠানটি ৮-৯টি দেশের আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সম্প্রচারকর্মীদের নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ক্যামেরা অপারেটর, রিপ্লে বিশেষজ্ঞ, গ্রাফিকস ডিজাইনার ও সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারদের সমন্বয়ে ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্ত দর্শকের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে।
বিপিএলকে আন্তর্জাতিক মানে উপস্থাপনের লক্ষ্যেই এবার সম্প্রচারে আনা হয়েছে ভিন্নতা। এ নিয়ে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যসচিব ইফতেখার রহমান বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শীর্ষ সম্প্রচার সংস্থার সঙ্গে যুক্ত পেশাদাররা এখানে কাজ করছেন। আমাদের লক্ষ্য ছিল আন্তর্জাতিক মানের একটি আধুনিক ও আকর্ষণীয় সম্প্রচার নিশ্চিত করা।’
এবার সম্প্রচারে ক্যামেরা পরিচালনা ও রিপ্লে ব্যবস্থাপনায় আনা হয়েছে পরিবর্তন। ধীরগতির রিপ্লেতে বোলারের অ্যাকশন, ব্যাটারের প্রতিক্রিয়া এবং দর্শকদের উচ্ছ্বাস স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। এর ফলে সম্প্রচারে এসেছে ধারাবাহিকতা ও প্রাণবন্ততা। সম্প্রচারের এই উন্নতির প্রতিফলন স্পষ্ট দেখা গেছে সিলেটে কুয়াশাচ্ছন্ন রাতের ম্যাচগুলোতেও।
আলো ও রঙের ভারসাম্য বজায় রেখে দৃশ্যগুলো স্পষ্টভাবে দর্শকের সামনে উপস্থাপন করা হচ্ছে। অনস্ক্রিন গ্রাফিকসেও এসেছে নতুনত্ব। ম্যাচসংক্রান্ত তথ্য সহজ ও সাবলীলভাবে দেখানো হচ্ছে।
চলতি মৌসুমে ধারাভাষ্যেও পরিবর্তনের ছোঁয়া দেখা যাচ্ছে। ধারাভাষ্য প্যানেলে যুক্ত হয়েছেন ওয়াকার ইউনিস ও রমিজ রাজার মতো খ্যাতনামা ধারাভাষ্যকাররা। তাঁদের সঙ্গে আছেন জনপ্রিয় পাকিস্তানি উপস্থাপিকা জয়নাব আব্বাস। সব মিলিয়ে বিপিএলের সম্প্রচার মানে যে উন্নতির ছোঁয়া লেগেছে তা বলাই যায়।
এফপি/অ