রাজধানীর মিরপুরে হযরত শাহ আলী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক খলিফা উজির আহম্মদের বিরুদ্ধে বর্তমান প্রধান শিক্ষিকা নার্গিস আক্তারসহ কয়েকজন সহকারী শিক্ষককে নানাভাবে হয়রাণির অভিযোগ উঠেছে।
তিনি নিজে টাইপ করে নানাজনকে দিয়ে সরকারী অফিসে ভূয়া এবং মিথ্যা দরখাস্ত দিয়ে একের পর এক হয়রাণি করে যাচ্ছেন। বর্তমান প্রধান শিক্ষিকাকে বরখাস্ত করে নিজে প্রধান শিক্ষকের পদ বাগিয়ে নেওয়ার হীন উদ্দেশ্যে এসব করছেন বলে অভিযোগ ভূক্তভোগী শিক্ষকদের।
খলিফা উজির এ জন্য নিজে হযরত শাহ আলী উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দরখাস্ত দিয়েছেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় এসব অভিযোগ স্বীকার করে তিনি আর এসব করবেন না বলে ম্যানেজিং কমিটির কাছে অঙ্গিকারনামা দিয়েছেন। স্বৈরচার হাসিনার শাসনামলে তৎকালীন স্থানীয় এমপি ও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল ইসলাম খান নিখিলের সাঙ্গ-পাঙ্গদের সঙ্গে মিলে এসব কাজ করেছেন। এরমধ্যে যুবলীগ নেতা আবদুল কাদের রিপন জুলাই হত্যাকান্ড মামলার আসামি ও তার স্ত্রী দিপা আক্তার রয়েছে।
স্কুলের কয়েকজন অবিভাবক অভিযোগ করে বলেছেন, শিক্ষক খলিফা উজির প্রধান শিক্ষক হওয়ার লোভে নারী অবিভাবকদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন এবং অবুঝ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করছেন।
গত ৫ আগস্টে স্বৈরাচার পালানোর পরও খলিফা উজির আহমদের অপকর্ম থেমে নেই বলে অভিযোগ করেন প্রধান শিক্ষিকা নার্গিস আক্তার। তার অভিযোগ, বিধি মোতাবেক কিছু করতে না পেরে নামসর্বস্ব একটি মিডিয়ার মাধ্যমে মানহানিকর বায়বীয় রিপোর্ট ছেপে যাচ্ছে।
এদিকে হযরত শাহ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক খলিফা উজিরের বিরুদ্ধে নানা হয়রাণিমূলক কর্মকান্ডের বিবরণ দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন নিরীক্ষা অধিদপ্তরে আবেদন দিয়েছেন স্কুলের অবিভাবকদের কয়েকজন। স্কুলে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে খলিফা উজিরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চান তারা।
এদিকে স্কুলে দায়িত্ব পালনকালে শিক্ষক খলিফা উজিরের বিরুদ্ধে অনৈতিকভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এসব বিষয়কে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলাসহ ভুল করে ফেলার অভিনয় করেন। স্বীকার পত্রে খলিফা উজির নিজেকে দীর্ঘদিনের মানসিক অসুস্থ দাবি করেন।
তিনি বলেছেন, তার স্ত্রী দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকায় মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে তিনি মাঝে মধ্যেই ভুল করে ফেলেন। এজন্য তিনি স্কুলের নির্বাচনী পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন।
আবু বকর সিদ্দিক নামের একজন অবিভাবক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার কাছে দরখান্ত করে জানান দেন যে খলিফা উজির আহমদ নিজে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে নিজে টাইপ করে প্রধান শিক্ষিকা নার্গিস আক্তারের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর নামে বেনামে মুক্তিযোদ্ধার নামে লিফলেট বিতরন, পোস্টার ছাপাচ্ছেন। একইসাথে দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে, শিক্ষাবোর্ড অফিস, ডিজি অফিসে দরখাস্তগুলো জমা দিচ্ছেন।
অভিযোগের ব্যাপারে খলিফা উজির আহাম্মদকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমার বিষয়ে আনা অভিযোগুলো মিথ্যা এবং বানোয়াট।
এফপি/এমআই