শিরোনাম: |
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে শক্তিশালী বিস্ফোরণের ঘটনায় কমপক্ষে পাঁচজন নিহত এবং আরও ৩৫ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কিছুক্ষণ আগে এই ঘটনা ঘটে। কাবুলে একটি হাসপাতাল পরিচালনাকারী ইতালীয় এনজিওর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি এই তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কাবুলের পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেলে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় নিরাপত্তা বাহিনী। এলাকা ঘিরে ফেলা হয় এবং সেখানে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল, ড্রোন ও ফরেনসিক ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের পর প্রবল কম্পন অনুভূত হয়। একজন বলেন, ‘একটি প্রচণ্ড শব্দের পর দেখা যায়, কালো ধোঁয়া আকাশে উঠছে।’ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে আশপাশের ভবনগুলো খালি করা হয়েছে এবং স্থানীয় হাসপাতালগুলোকে উচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে।
তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের তদন্ত চলছে। এখনো কেউ এর দায় স্বীকার করেনি। তিনি জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি মূল্যায়ন করছি এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে রাজধানীর সংবেদনশীল এলাকায় টহল জোরদারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই এ বিস্ফোরণ ঘটে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ওই সীমান্তে সংঘর্ষে বেসামরিক ও সামরিক উভয় পক্ষেই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এর আগে, ৯ অক্টোবর কাবুলের কেন্দ্রীয় সরকারি এলাকা আব্দুল হক স্কয়ারের কাছে পরপর দুটি বিস্ফোরণ ঘটে। তখন ধারণা করা হয়েছিল, হামলাটি পাকিস্তানভিত্তিক তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে চালানো হয়। যদিও কোনো গোষ্ঠীই ঘটনার দায় স্বীকার করেনি।
কাবুল কর্তৃপক্ষ প্রায়ই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এই ধরনের হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ তোলে। তবে ইসলামাবাদ সবসময় তা অস্বীকার করে এসেছে। বুধবারের বিস্ফোরণের কারণ এখনো নিশ্চিত না হলেও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, একটি গাড়িতে থাকা উচ্চপদস্থ জঙ্গিকে লক্ষ্য করে হামলাটি চালানো হয়ে থাকতে পারে। তবে এই দাবি এখনো যাচাই হয়নি।
সাম্প্রতিক সহিংসতার কারণে আফগান-পাকিস্তান সীমান্তে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্রসিং বন্ধ রয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এতে আঞ্চলিক অস্থিরতা আরও বেড়ে গেছে। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বাড়লে অঞ্চলটির স্থিতিশীলতা আরও নাজুক হয়ে উঠতে পারে।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, কাবুলে একের পর এক হামলার কারণে রাজধানীর নিরাপত্তা রক্ষায় তালেবান সরকারের সক্ষমতা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে। সরকার জানিয়েছে, দোষীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে এবং রাজধানীতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তদন্ত অব্যাহত থাকায় কাবুল এখনো উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। নাগরিকেরা জানতে চাইছেন, এই বিস্ফোরণের পেছনে কারা এবং এর প্রভাব দেশটির নাজুক স্থিতিশীলতাকে কোথায় নিয়ে যাবে।
এফপি/অআ