ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থিত মডার্ন ল্যাবরেটরিতে এক শিশুর কিডনি নষ্ট হয়েছে বলে ভুল রিপোর্ট দিলে পরিবারটি চরম বিপাকে পড়েন।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়ভাবে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। স্থানীয়দের অভিযোগ, মডার্ন ল্যাবরেটরিতে নষ্ট যন্ত্রপাতি এবং অনভিজ্ঞ জনবল দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়, যার ফলে এমন ভুল রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের বরাতে জানা গেছে, গত ১৭ জুলাই হাসামদিয়া গ্রামের জাহিদুল বেগ তার আড়াই বছরের ছেলে জিহাদের প্রসাবে জ্বালাপোড়ার সমস্যা নিয়ে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ মফিজ উদ্দিন কিডনি ও প্রস্রাব পরীক্ষা লিখে দেন। পরে জাহিদুল মডার্ন ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করান, যেখানে রিপোর্টে বলা হয় বাচ্চার কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে।
রিপোর্ট দেখে চিকিৎসক দ্রুত ফরিদপুর নিয়ে যেতে বলেন। পরিবারটি সেদিনই ফরিদপুর গিয়ে শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. এসি পালের পরামর্শে পুনরায় পরীক্ষা করান। ফরিদপুরের ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালে করা পরীক্ষায় দেখা যায় কিডনিতে কোনও সমস্যা নেই, শুধুমাত্র সামান্য প্রস্রাবের ইনফেকশন ধরা পড়ে।
বাচ্চার দাদি জবেদা বেগম বলেন, “মডার্ন ল্যাবরেটরির রিপোর্টে লেখা হয়েছিল কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। রিপোর্ট দেখে আমরা দিশেহারা হয়ে কান্নাকাটি শুরু করি। পরে ফরিদপুরে পরীক্ষা করিয়ে বুঝি রিপোর্টটা ভুল ছিল।”
এ বিষয়ে মডার্ন ল্যাবরেটরির মালিক জিয়া বলেন, “রিপোর্ট ভূয়া নয়, পরীক্ষায় কম-বেশি হতেই পারে।” এরপর তিনি আলফাডাঙ্গায় অবস্থান করছেন জানিয়ে ফোন কেটে দেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ মফিজ উদ্দিন বলেন, “রোগ নির্ণয়ের জন্য রিপোর্টের মান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভুল রিপোর্টের ভিত্তিতে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। আমরা চাই সব প্রতিষ্ঠান নিয়ম মেনে নির্ভুল রিপোর্ট দিক।”
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. মাহমুদ বলেন, “একই দিনে করা দুটি রিপোর্টে এত পার্থক্য অস্বাভাবিক। একটিতে এসেছে ২.৩৫, অন্যটিতে ০৩। এটি যথাযথ তদারকির অভাবের ইঙ্গিত দেয়। বোয়ালমারীর ক্লিনিকগুলো মনিটর করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিষয়টি দেখা উচিত।”
এফপি/রাজ