মেহেরপুর সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী নবীনপুর গ্রামের একমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় পড়েছে।
শিক্ষার্থী সংখ্যা মাত্র ১২ জনে নেমে আসায় বিদ্যালয়টি সরকারের স্কুল একীভূতকরণ নীতির আওতায় পড়ে গেছে। অথচ এ বিদ্যালয়টি ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে সীমান্ত এলাকার শিশুদের শিক্ষার আলো পৌঁছে দিয়েছে। এখান থেকেই অনেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।
বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে গেলে শিশুদের প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরের অন্য একটি স্কুলে যেতে হবে, যা বিশেষ করে বর্ষাকালে অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ। এতে করে শিশুরা স্কুলছুট হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। অভিভাবক ও স্থানীয়দের আশঙ্কা, শিক্ষার সুযোগ হারালে শিশুরা ভবিষ্যতে মাদক বা চোরাচালানের মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়তে পারে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, শিক্ষার্থী সংখ্যা কম হলেও তারা নিয়মিত পাঠদান করছেন এবং শিশুদের প্রতি তাদের ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ অটুট রয়েছে। প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয়রা সরকারের কাছে মানবিক বিবেচনায় বিদ্যালয়টি চালু রাখার আবেদন জানিয়েছেন।
নবীনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, এখানকার অনেক শিক্ষার্থী এই বিদ্যালয় থেকেই উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে ভালো জায়গায় গেছে। এখন যদি স্কুলটি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে সীমান্ত এলাকার এই শিশুরা অন্ধকারে তলিয়ে যাবে। আমরা সরকারের কাছে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিষয়টি বিবেচনার অনুরোধ জানাই।
এমনিতেই সীমান্ত এলাকার এই শিশুরা পিছিয়ে। শিক্ষার সুযোগ বন্ধ হয়ে গেলে তারা নানাবিধ ঝুঁকিতে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। কেউ কেউ বলছেন, শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হলে এই শিশুরা ভবিষ্যতে মাদক পাচার, চোরাচালান বা সীমান্ত অপরাধে জড়িয়ে পড়তে পারে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন জানিয়েছেন, এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি এবং বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ঊর্ধ্বতন মহলে উপস্থাপন করা হয়েছে। এই বিদ্যালয় শুধু একটি ভবন নয়, এটি একটি প্রজন্মের স্বপ্ন, সম্ভাবনা ও জীবনের অংশ। বিদ্যালয়টি রক্ষার মাধ্যমে সীমান্তের শিশুদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত রাখা সম্ভব।
এফপি/রাজ